নাটোরের বাজারগুলোতে ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাব পড়েছে। শনিবার সকাল থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ার কারণে বাজারে আসেনি শাক-সবজি। ফলে ক্রেতাদের চাপ বেড়ে যায় মুরগির বাজারে। ব্রয়লারসহ বিভিন্ন মুরগির দাম কেজি প্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে। খাসির মাংসের দাম কমলেও অপরিবর্তিত রয়েছে গরুর মাংসের দাম।
বৈরি আবহাওয়ায় শনিবার সকালে শহরের সবচেয়ে বড় নীচাবাজারসহ স্টেশন বাজার, মাদ্রাসা বাজারসহ অন্য বাজারগুলেতে সবজির পাইকারি বিক্রেতারা আসেননি। তবে দুর্বল ঘূর্নি ঝড় ফণী নাটোর এলাকা অতিক্রম করার পর দুপুরের দিকে সবজি সরবরাহ কিছুটা বাড়লেও ছিলনা ক্রেতা।
শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত শহরের সর্ববৃহৎ নীচাবাজার কাঁচাবাজার, স্টেশনবাজার, মাদ্রাসামোড় বাজার, হরিশপুরসহ গুরুত্বপূর্ণ বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।
থেমে থেমে বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ায় অন্যান্য দিনের তুলনায় বাজারগুলোতে ক্রেতাদের উপস্থিতি কম ছিল। তবে বেলা বাড়ার সাথে সাথে বাড়তে থাকে ক্রেতার সংখ্যা। দিনের শুরুতে বাজারগুলোতে সবজি ও মাছের সরবরাহ একেবারেই ছিল না। সকালের দিকে যারা বাজারে আসেন তাদের অনেকেই সবজি ও মাছ কিনতে না পেরে মুরগি বা গরুর মাংস কিনে বাড়ি ফিরে যান। এসময় চাপ বাড়ে মুরগির বাজারে। ফলে প্রতি কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বাড়ে ব্রয়লারসহ দেশি ও পাকিস্তানি মুরগির দাম।
গত দুইদিনের তুলনায় ১২০ টাকা কেজির ব্রয়লার মুরগি বাজারভেদে বিক্রি হয়েছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়। দেশি মুরগি বিক্রি হয়েছে ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা কেজিতে। এছাড়া অন্যান্য জাতের মুরগি কেজি প্রতি ২৪০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি করা হয়।
শহরের নীচাবাজার কাঁচাবাজার ও স্টেশন বাজার এলাকার হাতে গোনা দু-একটি দোকানে জবাই করা হয় গরু ও খাসি। গরুর মাংস কেজি প্রতি ৫০০ টাকা অপরিবর্তিত থাকলেও খাসির মাংস বিক্রি হয়েছে স্বাভাবিকের তুলনায় অন্তত ৫০টাকা কম দামে।
শনিবার দুপুরে নীচাবাজার কাঁচাবাজারে ৭০০ টাকা কেজির খাসির মাংস বিক্রি হয়েছে ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা দরে।
নীচাবাজার ও স্টেশনবাজারে শনিবার দুপুর পর্যন্ত আসেনি কোনো মাছ। আগের দিন বরফ দিয়ে সংরক্ষণ করা কাতল ও ইলিশ ছাড়া দেখা মেলেনি অন্য কোনো মাছের। দুপুরে বিক্রির জন্য এসব মাছ আনা হলেও এসময় ছিল না কোনো ক্রেতা। একই অবস্থা অন্য বাজারগুলোতেও।
নীচাবাজারের মুরগি বিক্রেতা জয়নাল হোসেন জানান, বাজারে মাছ না আসায় ক্রেতারা মুরগি কিনেছে বেশি। চাপ বেশি পড়াই কেজি প্রতি ৫ টাকা দাম বেড়েছে।
গরুর মাংস বিক্রেতা মোহম্মদ সেলিম জানান, তিনি শনিবার সকালে মাত্র একটি গরু জবাই করে আনেন। মাছের আমদানি না থাকায় অনেকেই গরুর মাংস নিয়ে বাড়ি ফিরে যান। চাহিদা বাড়ার কারণে নিমিষেই গরুর মাংস শেষ হয়ে যায়। তবে দাম বাড়েনি বা কমেনি।
খাসির মাংসের বিক্রেতা মুক্তা জানান, বাজারে মুরগি ও গরুর মাংসের ওপর চাপ পড়ায় খাসির মাংস দাম কমিয়েও বিক্রি করা যাচ্ছে না। ঘূর্ণি ঝড় ফণী আতংকের কারণে বাজারে ক্রেতাও তেমন ছিল না। সবজি বিক্রেতা মজিবর জানান, কম দামে সবজি বিক্রি করেও ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না।
দেওয়ান কাউয়ুম নামে এক ক্রেতা বেলা ১১টার দিকে নীচাবাজারে আসেন বাজার করতে। তিনি জানান, বাজারে মাছ কিনতে এসে না পেয়ে ডিম কিনে ফিরছেন তিনি।
নীচাবাজার কাঁচাবাজার পরিচালনা কমিটির সদস্য আবুল হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বাজারের ক্রেতা ছিল না। যারাও এসেছেন, তারা শাকসবজি না পেয়ে ফিরে গেছেন। যেসব পণ্য বিক্রি হয়েছে সেগুলোও নির্দিষ্ট দামের চেয়ে কম দামে বিক্রি হয়েছে পণ্য। আবহাওয়া পরিস্থিতির উন্নতি হলে বাজারও স্বাভাবিক হবে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন