হবিগঞ্জে সরকারের খাদ্যশস্য সংগ্রহের আওতায় ধান-চাল সংগ্রহে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। কৃষকদের কাছ থেকে ধান চাল ক্রয় না করে প্রভাবশালী মিল মালিকদের কাছ থেকে ক্রয় করছেন কর্তৃপক্ষ। একই সাথে নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে সরকারি খাদ্য গোদামের কর্মকর্তারা তাদের পছন্দের মিল মালিকদের কাছ থেকে প্রাপ্ত বরাদ্দের চেয়ে অতিরিক্ত চাল সরবরাহ করছেন। এ নিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
সম্প্রতি একজন ব্যবসায়ী সিলেটের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক বরাবরে উক্ত ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অপরদিকে অনেক স্থানে কৃষকরা সরকারি গোদামে চাল দিতে না পারারও অভিযোগ করেছেন।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. আবদুস ছালাম। তিনি বলেন, জেলার কোথাও এমন ঘটনা ঘটেনি। এ ধরণের কোন অভিযোগও পাওয়া যায়নি। তিনি যে অভিযোগটি করেছেন তা সম্পূর্ণ মনগড়া। এটি সঠিক নয়। কৃষকদের ধান দেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, অনেকেই ভেজা ধান দিতে চেয়েছেন। কেউ ধানের সাথে শুধু ছাল দিতে চান। সেগুলো নেয়ার বিষয়ে তাদের বলা হচ্ছে যেন তারা ধান এনে দেন। কেউ আধা সেদ্ধ, আবার কেউ সেদ্ধ না দিয়েই চাল দিতে চান। ধানের ছাল (চুঁচা) নেয়ার কোন সুযোগ নেই। সরকারি নিয়ম অনুযায়ীই ধান চাল সংগ্রহ করা হচ্ছে।
অভিযোগ উল্লেখ করা হয়, খাদ্যশস্য কর্মসূচির আওতায় হবিগঞ্জ জেলায় ৮ হাজার ৬৬৭ মে.ট. সিদ্ধ চাল সরকারিভাবে সংগ্রহ করার কথা ছিল। শুরু দিকে জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবীর মুরাদ সরকারের কর্মসূচি সফল করার জন্য ও কৃষকরা যাতে ন্যায্যমূল্য পায় সে লক্ষ্যে কৃষকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ধান ক্রয় করে কৃষকদেরকে উদ্বুদ্ধ করেন। বিভিন্ন উপজেলার ইউএনওরাও কৃষকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ধান সংগ্রহ করেন। কয়েকদিন এ কার্যক্রম চলে। কিন্তু এ কার্যক্রম যখনই খাদ্যগোদাম কর্তৃপক্ষের হাতে যায়, তখনই অনিয়মের শুরু হয়। চাল ও ধানের দাম সরকারিভাবে বেশি হওয়ায় অতিরিক্ত মুনাফা লাভের জন্য সরকারি খাদ্য কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে অসাধু মিল মালিকরা এ সুযোগ নেন। পরবর্তীতে কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ধান চাল সংগ্রহ না করে মিল মালিকদের কাছ থেকে চাল সংগ্রহ করেন খাদ্য কর্মকর্তারা। গত ২০ আগস্ট অভ্যন্তরীণ খাদ্যশস্য সংগ্রহ ২০১৯ কর্মসূচির আওতায় চাল বিভাজনে অনিয়মের অভিযোগ এনে সিলেটের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন এসএন অটো রাইছ মিলের স্বত্বাধিকারী জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক শংকর পাল। অভিযোগের অনুলিপি সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে তিনি প্রেরণ করেন।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এ বছর জেলায় ৬ হাজার ৫শ মেট্রিক টন ধান ও ১৩ হাজার মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ করা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার