সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় প্রথমবারের মতো চাষ হয়েছে বিষমুক্ত সাগরকলা’র। কোন ধরণের কীটনাশক ছাড়াই কলা চাষে সাফল্য এনেছেন চাষিরা। এক ফলনে দু’বার ফসল। গাছের গোড়ায়ই জাগে নতুন চারা। চারা বিক্রিতেও হচ্ছে বাড়তি মুনাফা। অল্প জায়গায়, স্বল্প খরচ ও সময়ে বেশি লাভ হওয়ায় ব্যাপকভাবে কলা চাষের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন কৃষকরা।
সরেজমিন উপজেলা সদরের রামপাশা সড়কের পার্শ্ববর্তী দক্ষিণ মশুলা এলাকায় কলার বাগানে গিয়ে দেখা গেছে, বাগানে রয়েছে সারি সারি সাগরকলা’র গাছ। প্রতিটি গাছেই ঝুলছে পুষ্ট সবুজ কলার ছড়ি। প্রতি ছড়িতে রয়েছে প্রায় ১৫০/২০০টি কলা। কলার ভারে নুয়ে পড়েছে কোন কোন গাছ। এছাড়া সবক’টি গাছের গোড়ায় জন্মেছে ৮/১০টি করে নতুন চারাগাছ।
কলাচাষী জমির আলী জানান, কৃষি অফিস থেকে প্রদর্শনী পেয়ে দক্ষিণ মশুলা এলাকায় ৩০ শতক জমিতে ১৮ সালের জুন মাসে সাগরকলার চারা রোপন করেন তিনি। শুরুতে জমি তৈরি ও এ পর্যন্ত বাগান পরিচর্যায় খরচ হয়েছে তার ২০-২৫ হাজার টাকা। ১৪-১৫ মাসের মাথায় এখন প্রতিটি গাছেই কলা এসেছে আশানুরুপ। তার বাগানের সাগর কলার ২০০টির কাদি ৪০০ টাকা হারেও যদি বিক্রি হয় তবুও এর বাজার মূল্য রয়েছে ৮০,০০০ হাজার টাকা। এছাড়াও প্রতিটি গাছ থেকে জন্ম নেওয়া চারা নিজের পরবর্তী বাগানের জন্যে রেখে দিয়ে অবশিষ্টগুলো বিক্রি করে বাড়তি আয় করছেন তিনি।
একই ভাবে একই সময়ে কৃষক জমির আলীর মতো সাগর কলার চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের মাওলানা ফারুক আহমদ ও খাজাঞ্চী ইউনিয়নের কৃষক ফজলুল হক।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, গত বছরের জুন মাসে (২০১৮’র জুন) সিলেট অঞ্চলে শস্যের নিবিড়তা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের আওতায় কৃষি সস্প্রসারণ অধিদপ্তর’র উদ্যোগে স্থানীয় ৩ জন চাষিকে সাগরকলার প্রদর্শনী দেওয়া হয়। এ অঞ্চলে সাগরকলা চাষের প্রচলন নেই। তবে, তিনজন কৃষকই প্রথমবারের মতো সফলভাবে সাগরকলা চাষ করেছেন। চলতি বছর নতুন করে আরো ৫ জন কৃষকের মধ্যে দেয়া হয়েছে সাগরকলার প্রদর্শনী।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রমজান আলী ‘বাংলাদেশ প্রতিদিন’কে বলেন, বিষমুক্ত ফল-ফসল উৎপাদন এখন সময়ের দাবি। প্রথম প্রদর্শনী নেওয়া তিনজন কৃষকই বিষমুক্ত সাগরকলা চাষে সফল্য এনেছেন। প্রবাসী অধ্যুষিত বিশ্বনাথে দেয়াল ঘেরা বাড়ির খালি জায়গা ও উঁচু জায়গায় কলাসহ লেবু জাতীয় ফলের চাষাবাদ বৃদ্ধির জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করে যাচ্ছি। এতে কৃষক আর্থিকভাবে লাভবানের পাশাপাশি স্থানীয়দের ভিটামিন ও খনিজ লবনের চাহিদা পূরণে বাণিজ্যিক ফলের চাষের জন্যে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। কৃষি বিষয়ক যেকোন পরামর্শে কৃষি বিভাগ কৃষকের পাশে আছে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল