১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ১৭:০০

দু’জন চিকিৎসক দিয়ে চলছে রাজাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স!

ঝালকাঠি প্রতিনিধি

দু’জন চিকিৎসক দিয়ে চলছে রাজাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স!

প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও অন্যান্য লোকবলের অভাবে ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর উপজেলার ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এখন বেহাল দশা। এতে করে রোগীরা তাদের চাহিদা মতো চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে না। 

বর্তমান সরকার যখন চিকিৎসা সেবাকে মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে বদ্ধ পরিকর। সেখানে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও লোকবলের অভাবে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে রাজাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ৫০ শয্যা বিশিষ্ট এই হাসপাতালে ১৫ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে আছে মাত্র দু’জন। 

১৩ জন চিকিৎসকের পদ শূন্য আছে। এতে প্রতিদিন রোগীরা এসে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা না পেয়েই ফিরে যাচ্ছে।  বঞ্চিত হচ্ছে চিকিৎসা সুবিধা থেকে। 

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও বাস্তবে সেবাদানের ক্ষেত্রে কোনো প্রকার উন্নতি ঘটেনি। এখানে অপারেশন থিয়েটার স্থাপন করা হলেও কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া হয়নি। এ কারণে অপারেশন থিয়াটারে স্থাপিত কোটি টাকার যন্ত্রপাতি অযন্ত অব্যবহারে নষ্ট হচ্ছে। প্রতিদিন এখানে বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে রোগীরা এসে চিকিৎসক না পেয়ে জেলা সদর  হাসপাতালে চলে যান। বিশেষ করে গর্ভবতী নারীদের সিজারিয়ান (সিজার) করা জরুরি হয়ে পড়লেও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় তাদের কষ্টের সীমা থাকে না।

অভিযোগকারীরা জানান, রাজাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক না থাকায় হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ডাক্তারের পরিবর্তে হাসপাতালের পিয়ন আর ওয়ার্ড বয়রা বিভিন্ন সময়ে চিকিৎসা দেয়। ডাক্তার না থাকায় ব্যান্ডেজ, সেলাইসহ ছোটখাটো বিভন্নি অস্ত্রোপাচার পিয়ন ওয়ার্ড বয়রাই করে থাকেন।

উপজেলা কমপ্লেক্সে জুনিয়র কনসালটেন্ট (সার্জারি), জুনিয়র কনসালটেন্ট (গাইনী), জুনিয়র কনসালটেন্ট (মেডিসিন), জুনিয়র কনসালটেন্ট (এনেসথিসিয়া), ডেন্টাল সার্জন, সহকারী সার্জনসহ অনেক চিকিৎসকের পদ র্দীঘদিন ধরে শূন্য আছে। 

৫০ শয্যা হাসপাতাল হিসেবে খাদ্য বরাদ্ধ পাওয়া গেলেও চাহিদা মোতাবেক ওষধপত্রসহ চিকিৎসক ও জনবল পোস্টিং দেয়া হয়নি। অথচ এ হাসপাতালে প্রায় সময় ইনডোরে ৬০-৭০ জন রোগী ভর্তি থাকে এবং আউটডোরে ১৫০/২০০ জন রোগী চিকিৎসা নিতে আসে। বিশেষ করে গাইনি কোনো ডাক্তার না থাকায় নারী রোগীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। হাসপাতালে ব্ল্যাড ব্যাংক নেই। এখানে বহু বছর ধরে এক্স-রে মেশিন থাকলেও মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (রেডিও) অভাবে ব্যবহার হচ্ছে না। হাসপাতালে অত্যাধুনিক অপারেশন থিয়েটার (ওটি) ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি থাকলেও প্রয়োজনীয় জনবল, এনেসথিসিয়া ও সার্জারি ডাক্তার না থাকায় সিজারসহ অন্যান্য অপারেশন বন্ধ রয়েছে। দাঁতের চিকিৎসার প্রয়োজনীয় সামগ্রীসহ আধুনিক যন্ত্রপাতি নেই।

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান চিকিৎসক সঙ্কটের কথা স্বীকার করে বলেন, বর্তমানে দু’জন ডাক্তার দিয়ে চলছে চিকিৎসা কার্যক্রম। ডাক্তার সঙ্কটসহ বিভিন্ন সমস্যার কথা জানিয়ে লিখিত ও মৌখিক ভাবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হলেও প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না।


বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর