২০ অক্টোবর, ২০১৯ ২০:১৩

জরায়ুর অপারেশন করতে গিয়ে পায়ুপথ কেটে ফেলল ডাক্তার

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি:

জরায়ুর অপারেশন করতে গিয়ে পায়ুপথ কেটে ফেলল ডাক্তার

ভুল চিকিৎসায় জরায়ুর অপারেশন করতে গিয়ে রোগীর মলদ্বার কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে নারায়ণগঞ্জ শহরের কালিরবাজার এলাকাতে নবাব সিরাজউদ্দৌলা সড়কের পাশে অবস্থিত মেডিপ্লাস জেনারেল হাসপাতালের কনসালট্যান্ট গাইনীকোলজিস্ট ও সার্জন ডা. কামরুন নাহারের বিরুদ্ধে। 

শনিবার দুপুরে ওই ঘটনাটি ঘটলেও রাতে গণমাধ্যমে জানাজানি হয়। ভুক্তভোগী রোগীর নাম ডালিয়া বেগম (৪০)। তিনি বন্দর লেজার্স এলাকার মঞ্জুরুল ইসলামের স্ত্রী। ভুল চিকিৎসার শিকার হয়ে হাসপাতালের বেডে রোগী কাতরালেও অপারেশনের পর ডাক্তার রোগীর কোনো খোঁজ নেয়নি বলেও অভিযোগ করেন রোগীর স্বজনেরা। 

রোগীর মা নূরজাত বেগম বলেন, কিছুদিন আগে জরায়ুর সমস্যা নিয়ে ডা. কামরুন নাহারের কাছে আসি। বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে তিনি বলেন যে রোগীর জরায়ুতে সমস্যা আছে অপারেশন করাতে হবে। ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে অপারেশন করতে রাজি হন তিনি। শনিবার সকাল ৯টায় আমাদেরকে হাসপাতালে আসতে বললে আমরা যথাসময়ে চলে আসি। পরে দেড়টার দিকে অপারেশন শুরু হয়। কিন্তু কয়েক ঘণ্টা চলে গেলেও অপারেশন শেষ হয় না। রোগীর কি অবস্থা সেই বিষয়েও কিছু বলেন না। বারবার প্রেসক্রিপশন দিয়ে বিভিন্ন ওষুধ আনতে বলেন। কয়েকবার ওষুধ আনার পর ফার্মেসির লোকেরা বলে যে আপনারাতো জরায়ুর অপারেশন করতে এসেছেন এই ওষুধ তো পায়ুপথের জন্য। এগুলো দিয়ে কি করবেন? তখন আমাদের সন্দেহ হলে আমরা চিৎকার শুরু করি। এরপর তাঁরা ভুল চিকিৎসার কথা স্বীকার করেন। পরে অপর এক ডাক্তারকে এনে অপারেশন করান। 

এ প্রসঙ্গে পায়ুপথের অপারেশন করা ডাক্তার এস.এম ইফতেখার উদ্দীন সাগর বলেন, আমি অন্য একটি রোগী দেখার জন্য এখানে এসেছিলাম। এখানে এসে এই ঘটনা শুনতে পারি। পরে আমাকে অপারেশনের কথা বললে আমি করে দেই। আমি এর বেশি কিছু জানি না।
 
মেডিপ্লাস জেনারেল হাসপাতালের ম্যানেজার বলেন, এই রোগী ডাক্তার কামরুন নাহারের। তিনিই এখানে পাঠিয়েছেন এখানে ভর্তি হয়েছেন। অপারেশনের সময় ডা. কামরুন নাহার আমাকে বলেন যে, একটা ক্রিটিক্যাল সমস্যা হয়েছে একজন সার্জারি ডাক্তার ডাকতে হবে। আমরা একজনকে ডাকি। তিনি অপারেশন করে রোগীর স্বজনদের বলে গেছেন যে, অপারেশন করার সময় পায়খানার রাস্তা কেটে ফেলেছে। এখন ঠিক হতে একমাস সময় লাগবে। তবে এই ঘটনার পর বেশ কয়েকবার ফোন করে বলার পরেও এখনো পর্যন্ত ডা. কামরুননাহার রোগীর কোনো খোঁজ নিতে আসেন নাই। সাড়ে ১০টার দিকে আসবে বলেছে। তিনি আরো বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি তাঁরা এসে কি করার তারাই করবে। 

এ প্রসঙ্গে ঘটনাস্থলে যাওয়া নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার এসআই রিপন আলি খান বলেন, ভুল চিকিৎসার খবর পেয়ে এখানে এসেছি। খোঁজ-খবর নিচ্ছি। তবে এখনো কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বিডি প্রতিদিন/মজুমদার

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর