টাঙ্গাইলের গোপালপুরে মেয়ের জামাইয়ের সাথে শাশুড়িকে বিয়ে দেয়ার ঘটনায় হাদিরা ইউপি চেয়ারম্যান কাদের তালুকদারসহ ১১ জনকে আসামি করে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গোপালপুর আমলি আদালতের বিচারক শামছুল হক মামলাটি আমলে নিয়ে গোপালপুর থানাকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
আজ রবিবার গোপালপুর আমলি আদালতে শাশুড়ি মাজেদা বেগম বাদী হয়ে হাদিরা ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য ও কাজীসহ ১১ জনের নামে মামলা দায়ের করেছেন।
মামলা বিররণে জানা গেছে, গোপালপুর উপজেলার হাদিরা ইউনিয়নের কড়িআটা গ্রামের নুরুল ইসলামের স্ত্রী ও শাশুড়ি মাজেদা বেগম ও তার মেয়ের জামাতাকে মারধর করে জোরপূর্বক স্বামীর সাথে খোলা তালাক দিয়ে কাজী ডেকে মেয়ের জামাতার সাথে বিয়ে দেয়া হয়। হাদিরা ইউপি চেয়ারম্যান কাদের তালুদকার ও ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম সেই সালিশি বৈঠকের বিচার করে শাশুড়ির সাথে জামাতার বিয়ে দেয়ার এ নির্দেশ দেন।
বাদীর আইনজীবী হাবিবুর রহমান জানান, রবিবার আদালতে বাদী মাজেদা বেগম হাজির হয়ে ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলায় দায়ের পর আদালতের বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে গোপালপুর থানাকে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন আদালতে দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার হাদিরা ইউনিয়নের প্রত্যন্ত এলাকার কড়িয়াটা গ্রাম। এ গ্রামের নিতান্তই দরিদ্র নুরু মিয়ার মেয়ে নূরন্নাহারের সাথে চলতি বছরের আগষ্টের ৯ তারিখে এক লাখ টাকার দেনমোহরে বিয়ে দেয়া হয় আরেক হতদরিদ্র পার্শ্ববর্তী ধনবাড়ি উপজেলার হাজরাবাড়ীর পূর্বপাড়া গ্রামের মৃত ওয়াহেদ আলীর ছেলে মোনছের আলীর সাথে।
বিয়ের কিছুদিন সংসার জীবন ভালো কাটলেও কয়েক দিন পরই দেখা দেয় দাম্পত্য কলহ। বিয়ের দেড় মাসের মাথায় চলতি মাসের শুরুর দিকে মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে যান শাশুড়ি। চলতি মাসের ৮ অক্টোবর সকালে স্ত্রী এবং শাশুড়িকে সাথে নিয়ে শ্বশুর বাড়ি কড়িয়াটাতে আসে মোনছের। এসময় স্ত্রী নূরন্নাহার তার অভিভাবকদের স্বামীর সংসার আর করবে না বলে জানায়। আর তা নিয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্যসহ গ্রামবাসী সালিশি বৈঠক করেন। পরে বৈঠকে স্বামীর সাথে সংসার করতে অস্বীকার করলে রাগে এবং ক্ষোভে মা বলে উঠেন- 'তুই না করলে আমি করব'। আর এতেই মেয়ের জামাইয়ের সাথে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ তুলে শাশুড়ি ও মেয়ের জামাইকে বেদম প্রহার করার আদেশ দেন বৈঠকে উপস্থিত চেয়ারম্যান, মেম্বার ও স্থানীয় মাতব্বররা। এরপর শ্বশুরকে দিয়ে শাশুড়ি এবং তাকে (মেয়ের জামাই) দিয়ে স্ত্রীকে তালাক দিতে বাধ্য করে তারা। পরে একই বৈঠকে কাজী ডেকে শাশুড়ির সাথে মেয়ের জামাইয়ের বিবাহ রেজিস্ট্রি করানো হয়।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার