১৬ ডিসেম্বর, ২০১৯ ১৬:৫৫

মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে হামলা, বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাঙচুর

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে হামলা, বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাঙচুর

মহান বিজয় দিবসে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভা ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে একদল দুর্বৃত্ত। এ সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিও ভাঙচুর করে তারা। কাপড় দিয়ে মুখ ঢাকা ওই দুর্বৃত্তরা অতিথিদের জন্য মঞ্চে রাখা চেয়ারসহ বিভিন্ন জিনিসেও ভাঙচুর চালায়। 

সোমবার সকাল সোয়া ৯টায় শহরের জেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে। হামলা ও ভাঙচুরের প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক জেলা পরিষদ প্রাঙ্গণ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধারা। মিছিলটি শহরের মূল সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় অনুষ্ঠান স্থলে এসে প্রতিবাদ বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। 

জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শফিকুল আলম এমএসসি এ ঘটনার জন্য জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকারকে দায়ী করেছেন। তবে আল মামুন সরকার বলেছেন, এটি বিএনপি’র কাজ। 

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শফিকুল আলম এমএসসি বলেন, যারা বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার ছবি গুড়িয়ে দিয়েছে তারা হল প্রকৃত রাজাকার। এ সময় তিনি অভিযোগ করে বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকারের নির্দেশে তার অনুসারীরা এই হামলা করেছে। প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবি যারা এ হামলা চালিয়েছে তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হোক। এটি জেলা পরিষদের আয়োজিত সরকারি অনুষ্ঠান। আমরা জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে আইনগত ব্যবস্থা নেবো।

অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার জানান, বিএনপি’র মিছিল যাওয়ার সময় এটা করা হয়েছে। ভাঙচুরের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। 

পুলিশ সুপার আনিছুর রহমান বলেন, ঘটনার সময় আমরা জেলা প্রশাসনের অনুষ্ঠানে ছিলাম। তবে এ ঘটনার তদন্ত করছি। যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

এদিকে, জেলার ১৪৫ জন মুক্তিযোদ্ধাকে সংবর্ধনা দিয়েছে জেলা পরিষদ। প্রত্যেককে উত্তরীয়, নগদ অর্থ, শাল ও ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের ফুলেল শুভেচ্ছাও জানানো হয়। সংবর্ধিত মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে রয়েছেন- সাবেক মুক্তিযোদ্ধা সচিব মিজানুর রহমান, সাবেক অতিরিক্ত সচিব সাফিজ উদ্দিন আহমেদ, সাবেক অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সামসুজ্জোহা চৌধুরী, সাবেক যুগ্ম সচিব মো. শাহজাহান মিয়া, সাবেক অর্থনৈতিক উপদেষ্টা শাহআলম সিদ্দিকী, সাবেক যুগ্ম সচিব নাজমুল হাই সানি। 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শফিকুল আলম এমএসসি। সভাপতিত্ব করেন জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নওয়াব আসলাম হাবীব।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর শহরের ফারুকী পার্কের স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবরক অর্পণের সময় তৎকালিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ও বর্তমান জেলা ছাত্রলীগের এক শীর্ষ নেতা ও তার অনুসারীরা শফিকুল আলমকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। হামলাকারীরা সেসময় শফিকুলের কর্মী-সমর্থকদেরও মারধর করে। এ ঘটনায় ছাত্রলীগের পাঁচ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিলো।

বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর