বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অবস্থার প্রেক্ষাপটে এখন সবচেয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ অর্থনীতির সবচেয়ে সুন্দর সময় এখন পার করছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীন বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হয়েছিল একরাশ স্বপ্ন বুকে নিয়ে। জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা আমাদের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার শর্ত পূরণ করেছে। তবে অর্থনৈতিকভাবে আমাদের আরও এগিয়ে যেতে হবে।
সোমবার বিকালে অর্থমন্ত্রী মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন সাবেক রেলমন্ত্রী ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুল হক মুজিব, সিনিয়র সহ-সভাপতি জসিম উদ্দিন, সহ-সভাপতি হাজী ইলিয়াস মিয়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন স্বপন প্রমুখ।
অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, গত দুই দশকে পৃথিবীতে কয়েকবার অর্থনৈতিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছিল। ১৯৯৭ সালে সারা বিশ্বে যে মহা অর্থনৈতিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছিল তাতে ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়াসহ এশিয়ার বেশ কিছু দেশ চরম অবস্থায় পতিত হয়। আর ২০০৮ সালের বিপর্যয়ে খোদ আমেরিকাসহ অনেক দেশে চরম অবস্থার সষ্টি হয়। কিন্তু তখনও আমাদের অর্থনীতি বিপর্যের সম্মুখীন হয়নি। এখন পৃথিবীতে তৃতীয় চরম অবস্থা বিরাজ করছে আর সেটি হচ্ছে তথাকথিত বাণিজ্য যুদ্ধ। চলমান এই বাণিজ্য যুদ্ধের প্রভাবে সারাবিশ্বের অথনীতিতে নিম্নমুখিতা দেখা দিয়েছে। এতে চীনের প্রবৃদ্ধি ১৪ দশমিক চার শতাংশ থেকে ৭ শতাংশে নেমে গেছে, কিন্তু বাংলাদেশের অথনীতি এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ক্রমাগতভাবে অর্থনৈতিক খাতে উন্নতি সাধন করেছ চলেছে। আমাদের প্রবৃদ্ধি বাড়ছে। গত অর্থবছরে আমরা ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছি। চলতি অর্থবছরেই আমরা ৮ দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে ৮ দশমিক ৩০ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের প্রত্যাশা করছি, যা ২০২৪ সাল নাগাদ দাঁড়াবে ১০ শতাংশ এবং সেটা অব্যাহত থাকবে। বিশ্বে যে কয়েকটি দেশের রপ্তানি আয় খুব দ্রুত বাড়ছে, তার মধ্যে বাংলাদেশ একটি। এতে সবচেয়ে বড় অবদান বাংলাদেশের মানুষের। কেননা আমাদের উৎপাদন আর চাহিদা আমাদের নিজেরাই তৈরি করি। ফলে আমাদের আর্থিক খাতে এই মুহুর্তে কোন রকম ঝুঁকি নেই। আমাদের রয়েছে কর্মদক্ষ ভবিষ্যত যুবশক্তির সম্ভাবনা। ২০৩০ সাল নাগাদ ৩ কোটি যুবকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। তখন কারোর কর্মসংস্থানের অভাব থাকবে না।
এছাড়া অর্থমন্ত্রী কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলায় ক্যান্সার, কিডনি, লিভার সিরোসিস, জন্মগত হৃদরোগসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসার সহায়তায় অর্থ অনুদান চেক বিতরণ করেন।
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে এসব অনুদান বিতরণ করা হয়। অনুদান বিতরণে আরো উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম সারওয়ার, লালমাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক বি.কম, সমাজসেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা এবং সদর দক্ষিণ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিয়া মোহাম্মদ কিয়াম উদ্দিন প্রমুখ।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন