বাগেরহাটে বৈরী আবহাওয়ায় কারণে চলতি বোরো ধান মৌসুমে ১৫ হাজার চাষির বীজতলার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে চরম হতাশার মধ্যে পড়েছেন বাগেরহাট জেলা সদরসহ চিতলমারী উপজেলায় বোরো কৃষকেরা। কয়েক দফা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে আমন মৌসুমে ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের শেষ ভরসা ছিল বোরো ধান। আমনের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে অনেক স্বপ্ন নিয়ে চাষিরা বোরো ধানের আবাদের জন্য বীজতলা তৈরি করে। তীব্র শীত ও বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে গেছে তাদের সব বীজতলার চারা। ফলে আবারও স্বপ্ন ভঙ্গ বোরো চাষিদের।
জেলা কৃষি বিভাগ এতথ্য নিশ্চিত করেছে। জানা গেছে, জানুয়ারি মাসের শুরু থেকে এলাকায় পুরোদমে বোরো ধানের চারা রোপণের মৌসুম শুরু হয়। এ সময়ে অধিকাংশ জমিতে চাষাবাদ শুরু করা হলেও এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে না থাকার কারণে নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে। গত কয়েক দিনের তীব্র শীত এবং বৃষ্টিতে বেশিরভাগ বোরো বীজতলার চারা সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে বোরো চাষের উপর নির্ভরশীল এই সব চাষি।
বাগেরহাট সদর উপজেলার নোয়াপাড়া প্রামের হাবিবুর রহমান বলেন, প্রতি কেজি বীজ ধান ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকা দরে কিনতে হয়েছে। এই চড়া মূল্যের বীজ বপন করে যে চারা জন্মেছিল একটানা শীত ও বৃষ্টির কারণে চারা নষ্ট হয়ে গেছে। এখন তৈরি করা জমিতে কি লাগাবো বুঝে উঠতে পারছি না। এর আগে ২ কেজি ধানের বীজ দিয়ে আমি ৬৮ শতক জমিতে রোপণ করেছিলাম। এ বছর ধনের চারার যে অবস্থা তাতে ৫ কেজি ধানের বীজেও ওই পরিমাণ জমি রোপণ সম্ভব না।
জেলা সদরের গাটাপাড়া গামের কৃষক জিন্নাত আলী, কাওছার হাওলাদার, তাপস, মোবারক আলী মুজু ও শান্তি চৌধুরী বলেন, বোরোর বীজতলা করেও চারা বানাতে পারিনি। যা হয়েছিল তা থেকে কিছু জমি রোপণ করলেও শীতে তা নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। গত বছরে ধানের মূল্য কম ছিল। তাই এবছর আর ঝুঁকি নেব না।
বাগেরহাট সদর ও চিতলমারী উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, এ বছর চিতলমারী উপজেলায় ৬০৩ হেক্টর জমিতে বপন করা বোরো ধানের বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে। উপজেলায় চাষির সংখ্যা ১৫ হাজার এবং ধান চাষের জমি রয়েছে ১১ হাজার ৮০০ হেক্টর। গত কয়েক দিনের শীতে বোরো বীজতলার অনেক ক্ষতি হয়েছে। শীতের তীব্রতা কেটে গেলে পরিস্থিতি ঠিক হয়ে যাবে। এ ব্যাপারে চাষিদেরনানা ভাবে পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক