তিননদী পরিষদ। সংগঠনটি কুমিল্লা নগর উদ্যানের জামতলায় ৩৭ বছর ধরে নতুন প্রজন্মকে ভাষা আন্দোলনের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস শুনিয়ে আসছে। ১৯৮৪ সাল থেকে তিননদী পরিষদ ২১ দিনব্যাপী আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে। মেঘনা, তিতাস ও গোমতী নদীর পাড়ের সংস্কৃতি চর্চার উদ্দেশ্যে ১৯৮৩ সালে তিননদী পরিষদ গঠিত হয়।
প্রবীণ শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ আমীর আলী চৌধুরী বলেন, কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের উদ্যোক্তা রফিকুল ইসলাম বাংলা ভাষার সম্মানকে তুলে ধরতে কাজ করেছেন। কুমিল্লার অজিত গুহ, মেজর গণিও ভাষার সম্মান রক্ষায় ভূমিকা রেখেছেন। অমর একুশ নিয়ে একুশ দিনব্যাপী ৩৭ বছর তিননদী পরিষদের অনুষ্ঠানমালা বাংলাদেশের ইতিহাসে ব্যতিক্রম ঘটনা।
তিননদী পরিষদের সভাপতি আবুল হাসানাত বাবুল জানান, তারা ভাষার গৌরব আর সংগ্রামের ইতিহাস জাগ্রত রাখতে কাজ করে যাচ্ছেন। ৩৭ বছর ধরে ২১ দিন ব্যাপী অনুষ্ঠান করতে গিয়ে অনেক দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে। প্রথম প্রথম তেমন সাড়া পেতেন না। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ঘুরতে হয়েছে। পরবর্তীতে সুধীজনের ব্যাপক সাড়া পাওয়া যায়। তিননদী পরিষদের কার্যক্রম এগিয়ে নিতে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জমির উদ্দিন খান জম্পি ও সদস্য পারভীন হাসানাতের অবদানের কথা তিনি বিশেষ ভাবে উল্লেখ করেন।
একুশ নিয়ে অনুষ্ঠান করার জন্য নগর পার্কের জাম গাছের নিচে জামতলার মঞ্চটি ১৯৮৪ সালে তৎকালীন ডিসি সৈয়দ আমিনুর রহমান পৌর সভার মাধ্যমে পাকা করে দেন। এ মঞ্চে আলোচনা হয় কুমিল্লার কৃতি সন্তান ভাষা সৈনিক ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত, অজিত কুমার গুহ, মেজর গনি, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের উপস্থাপক রফিকুল ইসলামসহ সব ভাষা শহিদ ও সৈনিকদের কথা।
ভাষা সৈনিকদের মধ্যে এ মঞ্চে কথা বলেছেন, অ্যাডভোকেট আহমেদ আলী, অধ্যাপিকা লায়লা নূর, আলী তাহের মজুমদার ও আবদুল জলিল প্রমুখ।
তিনি আরও বলেন, ভাষা সৈনিক অ্যাডভোকেট আহমেদ আলী সম্প্রতি ইন্তেকাল করেছেন। তার প্রতি এবারের কর্মসূচি উৎসর্গ করা হয়েছে। এছাড়া এবারের কর্মসূচিতে মুজিববর্ষ উপলক্ষেও আলোচনা করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম