কুমিল্লার চান্দিনায় গ্রেফতার হয়েছে বরুড়ার মইন্যা ডাকাত (৩২)। চান্দিনা জোয়াগ এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সে বরুড়ার ঝলম এলাকার ভঙ্গুয়া গ্রামের মমিন ডাকাতের ছেলে। তার বিরুদ্ধে ডজনেরও বেশি মামলা রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। তার উৎপাতে অতিষ্ঠ ছিল এলাকার মানুষ। দিনে দোকানে চাঁদাবাজি, রাতে ডাকাতি, মানুষকে হত্যার হুমকি, বকেয়া আদায়ের নামে চাঁদাবাজি, টাকা না দিলে নবদম্পতিকে হেনেস্তা করতো সে। পুলিশের তথ্যে সে মনির হোসেন, মনির ডাকাত প্রকাশ মইন্যা চোরা নামে পরিচিত। এর পূর্বে বহুবার গ্রেফতার হয়েছে সে। তার গ্রেফতারে এলাকায় স্বস্তি নেমে এসেছে। এলাকাবাসী তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চায়।
এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানান, সে নিজেকে আওয়ামী লীগ নেতা পরিচয় দেয়। দিনে মোটরসাইকেলের সামনে চাপাতি ও পিস্তল বহন করে। বিয়ে বাড়ি, বাজারের দোকান, নতুন ভবন তৈরি, এলাকার উন্নয়নমূলক কাজে তাকে টাকা না দিলে সে হত্যার হুমকি দেয়।
চান্দিনা থানা পুলিশ জানায়, ১১ মে মনির ডাকাত ও তার সঙ্গীরা চান্দিনা উপজেলার জোয়াগ এলাকার ফরহাদের বাড়িতে হামলা করে। এ সময় তাকে আটক করে পুলিশকে খবর দেয় এলাকাবাসী।
চান্দিনা থানা পুলিশের ইন্সপেক্টর মো. নাজির হোসেন জানান, আহত আবস্থায় ডাকাত মনিরকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। তার একটি পা ভেঙ্গে দিয়েছে এলাকাবাসী। ১২ মে তাকে চান্দিনা থানায় আনা হয়। তার বিরুদ্ধে ডাকাতি, চুরি, ছিনতাই, মাদক মামলা, আইনের কাজে বাধার ১৩টি মামলা রয়েছে।
চিতড্ডা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি ডা. আব্দুল হাকিম জানান, মনির কোন সময় আওয়ামী লীগ বা কোন সহযোগী সংগঠনের নেতা বা কর্মী ছিলো না। তার একটি বখাটে গ্রুপ আছে, সে এ গ্রুপের সাথে কাজ করে। তার বিরুদ্ধে আর বেশী কিছু বলতে পারবো না।
চিতড্ডা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো. ওমর ফারুক ও ঝলম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জানান, দিনে দোকানে দোকানে চাঁদাবাজি, রাতে ডাকাতি, মানুষকে হত্যার হুমকি, বকেয়া আদায়ের নামে চাঁদাবাজি, নব দম্পতিকে হেনেস্তা, স্কুল-কলেজ ছাত্রীদের বিরক্ত করাসহ সে বহু খারাপ কাজের সাথে জড়িত। তার ভয়ে এলাকার মানুষ কথা বলে না।
ওড্ডা গ্রামের একজন চা দোকানী জানান, মইন্যা ডাকাত ও তার বাহিনীর লোকেরা দোকানের বাকি টাকা দেয় না। ৫-৭ জন দোকানে আসলে ১৫০-২০০ টাকা বাকি রেখে যায়।
বরুড়া থানার ওসি সত্যজিৎ বড়ুয়া বলেন, তার বিরুদ্ধে প্রচুর অভিযোগ রয়েছে। বরুড়া থানা পুলিশ তাকে বহুবার গ্রেফতার করেছে। তার বিরুদ্ধে মাদক, চুরি ও ডাকাতির মামলা রয়েছে। গ্রেফতারের পর সে জামিনে ছাড়া পেয়ে যায়।
চান্দিনা থানার ওসি মো. আবুল ফয়সল জানান, মনিরের নেতৃত্বে ফরহাদের বাড়িতে হামলা করে ডাকাত দল। স্থানীয়রা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। তার বিরুদ্ধে ডাকাতি মামলা দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসা দেওয়ার পর তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার