২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ২১:৪৯

কুড়িগ্রামে ধরলার পানি বিপৎসীমার উপরে

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

কুড়িগ্রামে ধরলার পানি বিপৎসীমার উপরে

অবিরাম বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কুড়িগ্রামের ছোটবড় সবগুলো নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ফলে আরেক দফা বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। কয়েক দফা বন্যায় নাজেহাল হয়ে পড়েছে জেলার নদী তীরবর্তী হাজার হাজার মানুষ। 

শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ধরলা নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার ৪৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। তবে তা একটু কমে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিদৎসীমার উপরে প্রবাহিত হচ্ছে। সেই সাথে তিস্তাসহ অন্যান্য সকল নদ-নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে। 

চতুর্থ দফা বন্যার পানি কমে গেলেও গত দুইদিন যাবৎ পানি বেড়ে নতুন করে পঞ্চম দফা বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ফলে জেলার সদর, রাজারহাট, উলিপুর ও ফুলবাড়ী উপজেলাসহ চারটি উপজেলার শতাধিক চর ও দ্বীপচরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে।

এসব এলাকার ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। তাদের নৌকা ও কলার গাছের ভেলায় চরে এখন চলতে হচ্ছে। পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে প্রায় ৫ হাজার হেক্টর আবাদি জমির ফসল। 

মকবুল হোসেন নামে সদর উপজেলার কদমতলা গ্রামের চাষি বলেন, ‘কয়বার আর জমি গাড়মো। এইতো সেদিন লালমনিরহাট থাকি বিচন আনি রোয়া গাড়নো। ফির বান আসি ডুবি দিলে। তাহলে হামরা কৃষক মানুষ বাচমো ক্যামনে।’

কৃষিবিভাগের হিসেব মতে, এখন পর্যন্ত চতুর্থ দফা বন্যায় ৫ হাজার হেক্টর জমির ফসল নিমজ্জিত হয়েছে। তবে এ সংখ্যা বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া ধরলা, তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদে বন্যার পানি আসা ও কমা বাড়ার মধ্যে জেলার বেশ কয়েকটি পয়েন্টে নদী ভাঙন চলছে।

জেলার পাঁচটি উপজেলায় অন্তত ৩০টি পয়েন্টে নদী ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। ফলে নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষের ঘরবাড়ি, ফসলি জমিসহ নানা স্থাপনা প্রতিদিন নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে। গৃহহীন হয়ে পড়ছে শতশত মানুষ। পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙন কবলিত কয়েকটি পয়েন্টে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করলেও হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।

জেলা প্রশাসক রেজাউল করিম জানান, নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ১২ মেট্রিক টন চাল ৩ উপজেলায় প্রদান করা হয়েছে। তবে বন্যার চেয়ে নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এ সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। তবে এসব ভাঙনকবলিত মানুষ ত্রাণ চান না। তারা চান দ্রুততম সময়ে ভাঙন প্রতিরোধে স্থায়ী ব্যবস্থা। 

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর