পূর্ব শক্রতার জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলা শ্রমিক লীগের সহ-সভাপতি মনিরুজ্জামান জুয়েল প্যাদা (৩৫)-এর বাম হাতের কব্জি কাটার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেছেন। আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকার তেজগাও আয়শা মেমোরিয়াল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এর আগে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন জুয়েল প্যাদা।
নিহত জুয়েল প্যাদার স্বজন মো. আলীম ঢাকার হাসপাতাল থেকে জানান, জুয়েলের উপর হামলার ঘটনায় হাতের কব্জি কাটা ও কুপিয়ে গুরুত্ব জখম করা হলে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে ১২ ব্যাগ রক্ত দেয়া হয়েছিল।
চিকিৎসকের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, জুয়েলের শরীর থেকে এতটাই রক্তক্ষরণ হয়েছে যে তার কিডনির অবস্থা খুব খারাপ হয়েছিল। তাই তাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছিল। গতকাল বুধবার (১১ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১২টার দিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্বজনদের ডেকে বলেছেন আপনাদের রোগীর অবস্থা ভাল না। আপনারা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক দেখার পর জানিয়ে দেয় রোগী মারা গেছেন। হাসপাতালের ছাড়পত্র নিতে কিছু প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ নিয়ে কলাপাড়ার উদ্যেশ্যে রওনা করব আমরা।
কলাপাড়া থানার এসআই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো আলমগীর হোসেন বলেন, স্বজনদের কাছে শুনেছি জুয়েল প্যাদা মারা গেছেন। আমি জুয়েলের গ্রামের বাড়ি এলাকাই আছি। ১৩ জন আসামির মধ্যে দুজন ঘটনার পর গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
গত ৫ নভেম্বর বুধবার রাত ৮টার দিকে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার টিয়াখালী ইউনিয়নের পূর্ব রজপাড়া এলাকার শরীফ বাড়ির সামনে সশস্ত্র হামলা চালানো হয় একই এলাকার ফারুক প্যাদার ছেলে জুয়েলের উপর। সশস্ত্র হামলার সময় আসামিরা এলোপাথারি কুপিয়ে জুয়েলের বাম হাতের কব্জি কেটে ফেলে ও দুই পা কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে।
গুরুত্বর আহতাবস্থায় জুয়েলকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে কলাপাড়া হাসপাতালে নিয়ে গেলে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রথমে বরিশাল শেবাচিমে ভর্তি করলে পরে তাকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। ওই রাতেই বরগুনার আমতলী উপজেলার পূজা খোলা এলাকায় অভিযান চালিয়ে হামলার ঘটনায় জড়িত একই এলাকার বশির চৌকিদার ও সোহেল হাওলাদারকে আটক করা হয়েছে।
টিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের আসন্ন নির্বাচনে মনিরুজ্জামান জুয়েল চেয়ারম্যান নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন এমন ঘোষণা দেয়ার পর পরই প্রতিপক্ষের লোকের এ হামলা চালিয়েছে বলে দাবি পরিবারের। এ ঘটনায় জুয়েলের বাবা বাদী হয়ে মিজানুর রহমান ওরফে (মিজান মাস্টার)-কে প্রধান করে ১৩ জনের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১০/১২ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ