বাংলাদেশ প্রতিদিনে সংবাদ প্রকাশের পর বগুড়ার শেরপুরে বাঙালি নদীর চর ও ফসলি জমির মাটি কেটে বিক্রি বন্ধে অভিযানে নেমেছেন উপজেলা প্রশাসন। এসময় একাধিক পয়েন্টে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে প্রায় দুই লাখ টাকা জরিমানা আদায়সহ ছয়টি মাটি খননযন্ত্র জব্দ করা হয়।
গতকাল সোমবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এই অভিযান পরিচালিত হয়। এতে নেতৃত্ব দেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাবরিনা শারমিন।
সম্প্রতি বাংলাদেশ প্রতিদিনে বাঙালী নদীর মাটি লুট শীর্ষক সংবাদ প্রকাশের পর টনক নড়ে প্রশাসনের। তাই অবৈধভাবে বাঙালী নদীর চর ও ফসলি জমির মাটি কাটার মহোৎসব ঠেকাতে অভিযান শুরু করেছেন। এতে করে পাল্টে গেছে দৃশ্যপট। অভিযানের খবরে উপজেলার অন্তত বিশটি মাটি-বালু মহালে মাটি কাটা বন্ধ রেখে আত্মগোপনে গেছেন সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী চক্র। তবে সব মহলকে ম্যানেজ করে ওই চক্রটি আবারও মাটি কাটার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা যায়, উপজেলার সুঘাট ইউনিয়নের মধ্যে দিয়ে বহমান বাঙালি নদীর চোমরপাথালিয়া বাজার অংশে নদীর চর ও তীরবর্তী ফসলি জমি থেকে মাটি কাটা হচ্ছিল। এস্কেভেটর মেশিন দিয়ে ৬-৭ ফুট গভীর করে মাটি কেটে তা বিক্রি করছিলেন স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা। একইভাবে বাঙালি নদীর সুঘাট অংশ থেকেও মাটি লুটে নিচ্ছিল তারা।
এছাড়া বিশালপুর ইউনিয়নের পানিসারা, পাঁচদেউলি, কুসুম্বী ইউনিয়নের টুনিপাড়া, গাড়ীদহ ইউনিয়নের হাপুনিয়া, সুঘাট ইউনিয়নের আটাপাড়া, ভবানীপুর ইউনিয়নের ছোনকা, মির্জাপুর ইউনিয়নের সুখানগাড়ী, কাশিয়াবালা ও শাহবন্দেগী ইউনিয়নের উচরং, ঘুটুবটতলা, ঘোলাগাড়ী কলোনী এলাকায় ফসলি জমির মাটি কাটছিলেন প্রভাবশালী একটি চক্র।
পাশাপাশি এসব মাটি ইটভাটায় বিক্রি করা হয়। এনিয়ে সচিত্র সংবাদ প্রকাশ হলে বিষয়টি জেলা প্রশাসকের নজরে আসে। পরে তাঁর নির্দেশে মাটি কাটা ও বিক্রি বন্ধে উপজেলা প্রশাসন অভিযানে নামেন।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাবরিনা শারমিন জানান, বাঙালি নদী ও ফসলি জমি রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। বিশেষ করে বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। কেননা নদীর চর ও ফসলি জমি থেকে অবৈধভাবে মাটি-বালু উত্তোলন করা দণ্ডণীয় অপরাধ। এরপরও নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ফসলি জমির মাটি কেটে তা বিক্রি চলছে। তাই ওইসব মাটি-বালু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর