কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনে শুধুমাত্র বেগমগঞ্জ ইউনিয়নে অর্ধ শতাধিক বসতবাড়ি ভেঙে গেছে। বিনষ্ট হয়েছে গাছপালাসহ নানা স্থাপনা। হুমকিতে রয়েছে আবাদি জমিসহ ঐতিহ্যবাহী মোল্লারহাট বাজার। গত দুই মাসে ভয়াবহ নদী ভাঙন নদ তীরবর্তীদের আতংকে ফেলেছে। এসব ভাঙন কবলিত অসহায় মানুষদের মাথা গোঁজার ঠাঁইও এ মুহূর্তে নেই।
বিভিন্ন অফিস আদালতে ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানিয়েও কোন ফল আসছেনা বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। আর ভাঙন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় যে কোন মুহূর্তে বিলিন হয়ে যেতে পারে ঐতিহ্যবাহী মোল্লার এ হাটটি।
উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের ব্যাপারে জানান, দ্রুত নদী ভাঙন রোধে প্রয়োজন কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জানা যায়, কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার প্রত্যন্ত বেগমগঞ্জ ইউনিয়নে ভাঙনকবলিত স্থানে ব্রহ্মপূত্র নদ মোল্লারহাটের পূর্ব দিকের অংশে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাব্যাপী নদী ভাঙন চলছে। বর্তমানে এর পার্শ্ববর্তী মোল্লারহাটটি ভাঙনের মুখে।
বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড মেম্বার বাদশা জানান, গত পাঁচ বছরে মানচিত্র থেকে হারিয়ে গেছে ৬নং ওয়ার্ড। এই ওয়ার্ডের মানুষ এখন ৪ ও ৭নং ওয়ার্ডে আশ্রয় নিয়েছে। এখানেও চলছে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনের তাণ্ডব। ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে বসতবাড়ী, গাছপালাসহ আবাদি জমি। গৃহহীন পরিবারগুলো মানবেতর জীবন-যাপন করছে। কেউ কেউ জায়গা না পেয়ে নদীর তীরে আপাতত: ছায়লা করে বাস করছে।
৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার জামাল মন্ডল জানান, এই অঞ্চলের মানুষের একমাত্র ঐতিহ্যবাহী মোল্লারহাট রয়েছে ভাঙনের মুখে। চরাঞ্চলের মানুষের কেনাবেচার জন্য প্রয়োজনীয় এই হাটটি রক্ষায় মানববন্ধনসহ বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি চালাচালি করেও প্রতিকার মিলছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে ৫ শতাধিক জিও ব্যাগ ফেললেও তা কোনভাবেই কাজে আসছে না। এলাকাবাসীর দাবি দ্রুত ভাঙন প্রতিরোধে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান, শুকনো মৌসুমে মোল্লারহাটে নদী ভাঙন কিছুটা কম হলেও এরই মধ্যে আমরা ভাঙন রোধে কিছু জিও ব্যাগ ডাম্পিং-এর কাজ করার উদ্যোগ নিয়েছি। স্থায়ীভাবে ভাঙন প্রতিরোধে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান এ কর্মকর্তা।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল