বইয়ের পোড়া গন্ধ কোনোভাবেই থামছে না। গত রবিবার হেফাজতে ইসলামের হরতাল চলাকালে হামলাকারীদের হাত থেকে রেহাই পায়নি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরকারি গণগ্রন্থগার। পুড়ে গেছে সব বই। বইগুলো দেখে অনেকেই এখন হাউমাউ করে কান্নাকাটি করছেন।
তবে নতুনভাবে এই গণগ্রন্থগারটি সাজানো হলেও অনেক বই আর খুঁজে পাওয়া যাবে না। ঘড়ির কাটায় দুপুর সাড়ে ১২টায় পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল গণগ্রন্থগারটি সব বইগুলো। পুরো গণগ্রন্থগার এখন অন্ধকারাচ্ছন্ন একটি প্রতিষ্ঠান। নেই বিদ্যুৎ, নেই পানি।
ফলে কোনো বইয়ের দেখা মিলছে না। দুর্গন্ধে ভেতরেও প্রবেশ করা যাচ্ছে না। পুরো গণগ্রন্থগারটি জুড়ে শুধু আছে কালো ধোঁয়া আর ধোঁয়া।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কয়েকজন পাঠক, কবি ও সাহিত্যিকরা এই চিত্র দেখে শুধু আর্তনাদ আর আহাজারি করছেন। তারা বলছেন, তাদের কোনো প্রতিবাদের ভাষা নেই।
কবি জয়দুল হোসেন বলেন, বই কারও শত্রু কিংবা প্রতিপক্ষ হতে পারে না। বই সবার প্রিয়। তারপরও এই বই পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। করোনার সময় বন্ধ ছিল জেলা সরকারি গণগ্রন্থগারটি। চলতি বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি নতুনভাবে আবার চালু করা হয়। নতুন করে পাঠকরা আবার আসতে শুরু করেছিল। তার মধ্যে পুড়িয়ে দেওয়া হলো জেলা সরকারি গণগ্রন্থগারটি। কবে আবার নতুন বই কিংবা সংস্কার হবে তা কেউ সঠিকভাবে বলতে পারছে না।
এই গ্রন্থগারে ২৩ হাজার বই ছিল। ১৯৮৩ সালে এর যাত্রা শুরু হয়। ২০১২ সালের ২৪ জুলাই নতুন ভবনে স্থানান্তরিত হয়। গ্রন্থগারটিতে গবেষণাধর্মী বই, রেফারেন্স বই, পুরাতন পত্রিকা ছাড়াও শিশু কর্নার, বঙ্গবন্ধু কর্নার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া কর্নার, মুক্তিযুদ্ধ ও ভাষা আন্দোলন কর্নার ছাড়াও কবিতা ও সাহিত্যের হাজারো বই ছিল।
বিডি প্রতিদিন/এমআই