১৩ এপ্রিল, ২০২১ ১০:৩৪

'দুু'মুঠো ভাত খেয়ে বাঁচার আকুতি জানাচ্ছি'

সিলেট (বিশ্বনাথ) প্রতিনিধি

'দুু'মুঠো ভাত খেয়ে বাঁচার আকুতি জানাচ্ছি'

সময়ের পরিবর্তনে বেদে সম্প্রদায়ের অনেক কর্মই এখন মূল্যহীন। কমেছে আয়-রোজগার। এ অবস্থায় মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে বেদেদের জীবন। তবুও নানা উপায়ে চলছিল জীবিকা নির্বাহ। তবে আবারও করোনার প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায়, ভাটা পড়েছে উপার্জনে। বর্তমানে চরম আর্থিক সংকটে মানবেতর জীবন যাপন করছেন তারা। 

নদী-খাল থেকে ধরে আনা মাছ ও বুনো শাক খেয়ে ক্ষুধা মিঠছে তাদের। অস্থায়ী গড়া বসতি’র আশপাশের লোকদের থেকে সাহায্য চেয়ে খাবার আনছেন কেউ কেউ। সম্প্রতি সিলেটের বালাগঞ্জের সুইচগেইট সংলগ্ন নদী পাড়ের অস্থায়ী বেদেপল্লীতে গিয়ে দেখা যায়, খোলা আকাশের নিচে ছোট ছোট বাঁশের ফালি, চাটাই ও পলিথিন দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে অনেকগুলো খুপরি ঘর। অনেকটা অলস সময় পার করছেন তারা। 

স্বাভাবিক দিনে এসময়টা পল্লীর বাহিরে জীবিকার সন্ধানে ছুটতেন বেদে নারী-পুরুষ। হাট-বাজারে আগের তুলনায় মানুষের উপস্থিতি না থাকায় বাজারে বের হন না পুরুষরা। আগ্রহ নেই কারো সাপের খেলায়। সারা গ্রাম ঘুরেও ঝাড়ফুঁক-শিঙ্গা ও দাঁতের চিকিৎসায়ও তিনবেলা আহার জুুটেনা এখন।

বেদে পল্লীর সর্দার আমীর হোসেন (৫৫) ‘বাংলাদেশ প্রতিদিন’কে জানান, 'তাদের পূর্ব পুরুষদের নৌকায়ই ছিল ঘর-বাড়ি। আগের মতো জলে ভাসা জীবন এখন আর নেই। গেল এক মাস ধরে বালাগঞ্জের স্ইুচগেইট এলাকায় অস্থায়ী আবাস গড়েছেন তারা। বর্তমানে করোনার প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় স্থবির হয়ে পড়েছে তাদের জীবন-জীবিকা।'

তিনি আরও জানান, 'বংশ পরম্পরায় তারা যাযাবর। সাপের খেলা দেখিয়েই রুটি-রুজি চলে তাদের। এছাড়াও গাছ-গাছড়া থেকে কবিরাজি চিকিৎসা, তাবিজ-কবজ বিক্রি করেও জীবিকা নির্বাহ করতেন তারা। এ যুগে পুরনো কার্জ-কর্ম এখন অচল প্রায়। এর মধ্যে করোনাভাইরাস আমাদের জন্যে কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমাদের সাহায্য করারও কেউ নেই। এ অবস্থায় সরকারের কাছে দু’বেলা দুুমুঠো ভাত খেয়ে বাঁচার আকুতি জানাচ্ছি।'

 

বিডি প্রতিদিন / অন্তরা কবির

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর