করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যেই সারাদেশের ন্যায় কুড়িগ্রামেও ডায়রিয়া ও ভাইরাস জ্বরের প্রকোপ ব্যাপক বেড়েছে। তবে এখন পর্যন্ত ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাবার খবর না থাকলেও প্রতিদিন জেলার ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে অনেক রোগী। এদের বেশির ভাগই হচ্ছে শিশু, নারী ও বৃদ্ধ। এছাড়া ভাইরাস জ্বরেও আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে।
কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল সুত্রে জানা যায়, গত এক সপ্তাহে প্রায় আড়াই শতাধিক ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এখনও ভর্তি আছেন প্রায় অর্ধশতাধিক রোগী। গত ২৪ ঘণ্টায় এ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে আরও ১৯জন রোগী। প্রতিদিন রোগী বাড়ার সাথে সাথে হাসপাতালে ডায়রিয়া ইউনিটে চাপ বাড়ছে বলে জানা গেছে। জেনারেল হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে মোট ১২টি বেড থাকার কারনে বেড সংকটে প্রতিদিন মেঝেসহ বিভিন্ন জায়গায় প্রায় দ্বিগুণ রোগী ভর্তি থাকে। তবে এখন পর্যন্ত হাসপাতালে চিকিৎসা সরঞ্জাম ও খাবার স্যালাইনসহ ডায়রিয়া সংশ্লিষ্ট সবকিছুই যথাযথভাবে রোগীরা পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন রোগী ও তার স্বজনরা।
সদর উপজেলার বেলগাছা ইউনিয়নের হালমাঝিপাড়া গ্রামের স্বপন কুমারের স্ত্রী লাবনী রায় তার ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলে শিশিরকে ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি করেন। বেড সংকটে মেঝেতে তাকে থাকতে হয় গত দু'দিন। কথা হলে শিশিরের মা লাবনী জানান, এত রোগীর মধ্যে বেড না পেয়ে মেঝে বেড বিছিয়ে ছেলেকে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে। খালি হলে বেড দিবে বলে জানান তিনি।
অন্যদিকে ভোগডাঙা ইউনিয়ন থেকে আগত এক রোগীর স্বজন ফরিদ উদ্দিন জানান, আমার ছেলের একটি কন্যা সন্তান জন্মেছে বয়স হলো ৭ মাস। সে কয়েকদিন ধরে পাতলা পায়খানা ও জ্বরে ভূগছিল। সামলাতে না পেরে তাকে জেনারেল হাসপাতালে গতকাল ভর্তি করেছি। এখানে খাবার স্যালাইন ও চিকিৎসা ভালো পেয়ে একটু সুস্থ্য বোধ করছে।
এদিকে ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে অনেক পরিবার বলে জানান হাসপাতালপাড়ার বাসিন্দা ওবায়দুল হক। অনেক পরিবারে একসাথেই কয়েকজনের ভাইরাস জ্বর।
জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. নবীউর রহমান বলেন, অতিরিক্ত গরমের কারনে একটু ডায়রিয়া ও ইনফ্লুয়েঞ্জা জ্বরের রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। তবে আমাদের ডায়রিয়া ইউনিটে চিকিৎসার কোন ত্রুটি হচ্ছে না। আমরা যথাসাধ্য চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছি। খাবার স্যালাইনসহ ডায়রিয়া রোগীদের কোন সংকট এ মুহুর্তে হাসপাতালে নেই।
বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ