ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তায় আবারো পানি বেড়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নদীর পানি বিপদসীমার ৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে তিস্তা অববাহিকার চরাঞ্চলের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প লালমনিরহাটের হাতীবান্ধার তিস্তা ব্যারেজ ডালিয়া পয়েন্টে পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৬৮ সেন্টিমিটার, যা বিপদসীমার ৮ সেন্টিমিটার উপর (স্বাভাবিক বিপদসীমা ৫২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার) দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে, ব্যারেজ রক্ষায় ৪৪টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। এই নিয়ে চলতি মাসের ১৫ দিনে তৃতীয় দফায় তিস্তার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করল।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সূত্র জানায়, বুধবার রাত থেকে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় পানি ৫২ দশমিক ৬৮ সেন্টিমিটার প্রবাহিত হয়, যা বিপদসীমার ৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। জানা যায়, তিস্তা ব্যারেজ এলাকায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ইতিমধ্যে তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলগুলো ডুবে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে।
তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়া হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, সিঙ্গামারি, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের চৌরাহা,দক্ষিণবালাপাড়া, কুটিরপাড়,চরগোবরধন, সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুণ্ডা ইউনিয়নের নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করে প্লাবিত হয়েছে।
মহিষখোচা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোসাদ্দেক হোসেন চৌধুরী বলেন, তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চরাঞ্চলগুলো প্লাবিত হতে শুরু করেছে।
হাতীবান্ধা উপজেলার নিজ গড্ডিমারী গ্রামের ঝিন্টু মিয়া বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকেই পানি বাড়তে শুরু করেছে। এই গ্রামের শতাধিক পরিবারের বাড়িঘরে পানি ঢুকতে শুরু করেছে।
হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল জানান, তৃতীয় দফায় তিস্তার পানি বাড়ায় তার ইউনিয়নের কয়েক’শ পরিবারের ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করছে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিবার্হী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, তিস্তার পানি বিপদসীমার ৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ভারত থেকে প্রচণ্ড গতিতে পানি বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসছে। তিস্তা ব্যারাজের সব গেট খুলে দিয়ে পানির চাপ নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আরো কী পরিমাণ পানি আসবে তা ধারণা করা যাচ্ছে না।
হাতীবান্ধার ইউএনও সামিউল আমিন জানান, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। প্রয়োজন হলেই ত্রাণ বিতরণ করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই