দেশে প্রতি বছরই আমন মৌসুমে ঝাঁকে-ঝাঁকে ইঁদুর এসে হাজার হাজার মেট্রিক টন ফসল খেয়ে ফেলে। ইঁদুরের হাত থেকে ফসল রক্ষায় কৃষি বিভাগ ও স্থানীয় পর্যায়ে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করা হয়। তার পরেও উৎপাদিত ফসলের উল্লেখযোগ্য একটি অংশ ইঁদুরের পেটে চলে যায়। এবার আমন মৌসুমে রংপুর বিভাগের পাঁচ জেলায় ১১ লাখ ৮৭ হাজার ৬৭৬টি ইঁদুর নিধন করা হয়েছে।
প্রতি বছর রংপুর অঞ্চলে বিপুল পরিমান আমন ধান ইঁদুরের কারণে কৃষকরা গোলায় তুলতে পারে না। আমনের মোট উৎপাদনের ৬ শতাংশ ইঁদুরের পেটে যায়। প্রতি মৌসুমে গমের মোট উৎপাদনের ১০ শতাংশ, আলুর ৬ শতাংশ, শাক সবজির ৫ শতাংশ, নারিকেলের ১০ শতাংশ ও আনারসের ১০ শতাংশ ফলন ইঁদুররা ভক্ষণ করে।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সবচেয়ে বেশি ইঁদুর নিধন হয়েছে রংপুর জেলায়। এখানে ৭ লাখ ২৮ হাজার ২৮২টি, গাইবান্ধায় ১ লাখ ৮ হাজার ২৯০, কুড়িগ্রামে ৯৮ হাজার ৭৮টি, লালমনিরহাটে ৭৬ হাজার ১৫৬টি, নীলফামারীতে ১ লাখ ৭৬ হাজার ৬৬০টি ইঁদুর নিধন করা হয়েছে। করোনা মহামারীর কারণে এবার ইঁদুর নিধন কর্মসূচিতে ছাত্র-ছাত্রীরা অংশ নেননি। তবে কৃষি বিভাগের ১ হাজার ৬০ জন এবং ১ লাখ ৯৫ হাজার ১৩৬ জন কৃষক ইঁদুর নিধন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন।
কৃষি বিভাগ জানায়, গত বছর করোনার কারণে আনুষ্ঠানিকভাবে কোন পুরস্কার দেয়া হয়নি। তবে এবার আনুষ্ঠানিকভাবে সেরা ইঁদুর নিধনকারীদের পুরস্কার দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। চলতি মৌসুমে রংপুর অঞ্চলের ৫ জেলায় প্রায় ৬ লাখ হেক্টরের বেশি জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
ঢাকা খামারবাড়ি অতিরিক্ত উপ পরিচালক (ডিএই) কৃষিবিদ আবু সায়েম বলেন, সরকারীভাবে ১৯৮৩ সাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে দেশে এই ইঁদুর নিধন অভিযান শুরু হয়। কিন্তু কার্যকরভাবে ইঁদুর নিধন করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে মোট উৎপাদনের একটি উল্লেখ্যযোগ্য অংশ ইঁদুরের পেটে চলে যাচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ