পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় আগামী ১১ নভেম্বরে অনুষ্ঠিত হবে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনয়ন দিয়ে প্রার্থী ঘোষণা করেছে । আর এই প্রার্থী নির্বাচনে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। প্রত্যেক ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরাও গণসংযোগ শুরু করেছে । তাদের দাবি, প্রার্থী নির্বাচনে পুরোনো এবং ত্যাগী নেতা কর্মীদের মূল্যায়ন করা হয়নি। চেয়ারম্যান প্রার্থী নির্বাচনে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করা হয়নি। জনসমর্থনহীন প্রার্থীদের মনেনায়ন দেওয়া হয়েছে। অনেকেই দলের সিদ্ধান্তের বাইরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন।
উপজেলার সাত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে যারা দলের মনোনয়ন পেয়েছেন, তারা হলেন বাংলাবান্ধা ইউনিয়নে মো. মাহবুবুল আলম মিলন, তিরনইহাটে মো. দানিয়েল হোসাইন, তেতুঁলিয়া সদর ইউনিয়নে মাসুদ করিম সিদ্দিকী, শালবাহানে মো. আশরাফুল ইসলাম, বুড়াবুড়িতে মো. শেখ কামাল, ভজনপুরে মো. হারুন অর রশিদ লিটন এবং দেবনগড়ে মো. আবুল কালাম আজাদ (ডাবলু)।
এসব ইউনিয়নের প্রত্যেকটিতেই বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে । তারা ইতিমধ্যে প্রচারণাও শুরু করেছে । ভজনপুর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ নেতা এমদাদুল হক জানান, আমি দীর্ঘদিন এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলাম । গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছিলাম । এবার আমাকে মনোনয়ন দেয়া হয়নি । আমার পরিবার জন্মলগ্ন থেকেই আওয়ামী লীগ পরিবার । জেলা পর্যায়ের নেতারা অর্থের বিনিময়ে মনোনয়ন দিয়েছেন। আমার সমর্থকরা আমাকে নির্বাচনে অংশ নিতে বলছেন । তাই নির্বচন করবো।
একই কথা জানান, বাংলাবান্ধা ইউনিয়নের বিদ্রোহী প্রার্থী কুদরতি-খুদা-মিলন ।
এদিকে মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীরা বলছেন, বিদ্রোহীদের কোনো জনপ্রিয়তা নাই। ভজনপুর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ প্রার্থী হারুন অর রশিদ লিটন জানান, আমার ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থী আছে কিনা এখনো বলা যাবে না । তবে এমদাদুল হক কাজ শুরু করেছেন বলে শুনেছি । আশা করছি, তিনি দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নেবেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী মাহমুদুর রহমান ডবলু বলেন, চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে অপেক্ষাকৃত তরুণদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। তবে কয়েকটা ইউনিয়নে আরও ভালো প্রার্থী ছিল। এটা বিবেচনা করা উচিত ছিল।
তরুণদের স্থান দেয়ার বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার সাদাত সম্রাট জানিয়েছেন, এবারের ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে তৃণমূলে যাদের গ্রহণযোগ্যতা আছে, যারা ত্যাগী এবং দলের পেছনে যাদের অবদান রয়েছে, যারা নিজেদের অর্থে মানুষের পেছনে অর্থ ব্যয় করে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, ব্যক্তিগতভাবে যারা স্বচ্ছ তাদের দল মনোনয়ন দিয়েছে।
আগের প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যানদের কেন বাদ দেয়া হলো এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, এ উপজেলার বেশিরভাগ চেয়ারম্যান বিএনপির। আমাদের যারা ছিল তারা দলের পেছনে তেমন শ্রম দেননি। তারা বির্তকিত এবং মানুষের পাশে তেমনটা ছিলেন না। তাদের ব্যাক্তিগত স্বচ্ছতা নিয়ে মানুষের মনে প্রশ্ন রয়েছে। এ কারণে দল তাদের মনোনয়ন দেয়নি।
তিনি আরও জানান, আমাদের সবাই দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নৌকার প্রার্থীর পেছনে কাজ করবে। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে যদি কেউ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে তাহলে নির্বাচনের আগেই তাদের দল থেকে বহিস্কার করা হবে। যেমনটি দেবীগঞ্জ পৌর নির্বাচনের বেলায় করা হয়েছিল।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা