২৬ অক্টোবর, ২০২১ ২১:২৯

‘অচেনা জন্তুর’ আক্রমণে প্রাণ গেল ইমামের, আতঙ্কে মানুষ

অনলাইন ডেস্ক

‘অচেনা জন্তুর’ আক্রমণে প্রাণ গেল ইমামের, আতঙ্কে মানুষ

‘অচেনা জন্তুর’ আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার হরিনাথপুর গ্রামের তালুকজামিরা গ্রামের সর্বস্তরের মানুষ। প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে হামলার ঘটনা। এরই মধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন স্থানীয় মসজিদের ইমাম। এ ছাড়া আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছেন এক বৃদ্ধ।

চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন এলাকার সর্বস্তরের মানুষ। এলাকাবাসী জানান, জন্তুটি দেখতে কুকুর কিংবা শিয়ালের মতো, শরীরে রয়েছে ডোরাকাটা দাগ। পশুটির সামনের পা দুটি ছোট। মাথা ও লেজ আকারে বড়। এলাকার নারী-শিশু-বৃদ্ধসহ হামলার শিকার হচ্ছে গবাদি পশু। টানা দেড় মাস ধরে ঘটছে এসব ঘটনা। সুযোগ পেলেই এলাকার ঝোপ-ঝাড়, জঙ্গল, ধানের জমি থেকে বেরিয়ে এসে আক্রমণ করছে জন্তুটি।

তালুকজামিরা গ্রামে বাসিন্দা মোনায়ারুল ইসলাম জানান, মানুষ কিংবা গবাদি পশু পেলেই জন্তুটি আক্রমণ করে বসে পেছন থেকে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই লাফ দিয়ে মানুষের চোখে মুখে আঘাত করে নাক কান ছিঁড়ে নিচ্ছে। অদ্ভুদ এই জন্তুটির ভয়ে রাতেও ঘুমাতে পারছেন না স্থানীয়রা। ফসলের মাঠ বা আশপাশে বেড়াতে গেলেও লাঠি হাতে দলবদ্ধ হয়ে চলাচল করছেন তারা। গ্রামবাসী রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন।

তিনি আরও জানান, সর্বশেষ গত রবিবার সকালে নিজ বাড়ির পাশে জন্তুটির হামলার শিকার হয় সাত বছর বয়সী রাব্বী নামে এক শিশু। জন্তুটি শিশুটির মুখ-বুকসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে থাবা বসায়। শিশুটির চিৎকার শুনে তার মা এগিয়ে গেলে তার ওপরও হামলে পড়ে। শেষ পর্যন্ত আরেক প্রতিবেশীর লাঠির তাড়া খেয়ে পালিয়ে যায় অদ্ভুত আকৃতির জন্তুটি।

হরিনাথপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য রুবেল মিয়া জানান, ঘটনার শুরু দেড় মাস আগে। মাঠে ঘাস কাটতে যান তালুক জামিরা গ্রামের কৃষক স্থানীয় মসজিদের ইমাম ফেরদৌস সরকার রুকু (৫৬)। হঠাৎ তার ওপর লাফিয়ে পড়ে অদ্ভুদ একটি জন্তু। হাতের কাস্তে দিয়ে উপর্যুপরী আঘাত করেও রক্ষা পাননি তিনি। তার নাক-মুখ রক্তাক্ত করে পালিয়ে যায় ভয়ঙ্কর জন্তুটি। পরে তাকে উদ্ধার করে নেওয়া হয় জেলা সদর হাসপাতালে। সেখান থেকে পাঠানো হয় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। কিছুটা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার পর জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ১৮ দিন পর মারা যান তিনি। একই দিনে আরও তিনজনের ওপর আক্রমণের ঘটনা ঘটে। এরপর থেকে ঘটছে একের পর এক আক্রমণের ঘটনা।  

মঙ্গলবার পর্যন্ত আফসার আলী, শেফালী ও মুক্তাসহ অন্তত ২০ জন জন্তুটির আক্রমণের শিকার হয়েছেন।

পলাশবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুজ্জামান নয়ন বলেছেন, একের পর এক এ ধরনের অভিযোগ পাচ্ছি। এ ব্যাপারে জেলা সিভিল সার্জনের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছি অদ্ভুদ জন্তুটি পাগলা শেয়াল বলে ধারণা করা হচ্ছে। শেয়াল পাগল হলে কুকুরের চেয়ে ভয়ানক হয়ে থাকে। আক্রান্তদের ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। এলাকাবাসী মিলে প্রাণীটিকে প্রতিহত করতে হবে বলে জানান তিনি।

সূত্র : বাংলা নিউজ 

বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর