চলমান শাটডাউনের কারণে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচন পেছানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। গতকাল রাতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এ সিদ্ধান্তকে ছাত্রদল ও বামজোট স্বাগত জানালেও প্রত্যাখ্যান করেছে ছাত্রশিবির।
ছাত্রশিবিরসমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী মোস্তাকুর রহমান বলেন, ‘কমিশনের এই প্রহসন মানি না। এটা নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র। অবিলম্বে এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার চাই।’
এদিকে রাকসু নির্বাচন সফল করতে শাটডাউন তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক পরিষদ। এতে দাপ্তরিক কার্যক্রমে ফেরার ঘোষণা দেয় তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনস কমপ্লেক্সে জরুরি সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পরিষদের সভাপতি ড. সকিলউর রহমান। তিনি বলেন, বহুল প্রত্যাশিত রাকসু নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে শিক্ষকদের দাপ্তরিক কার্যক্রমে সক্রিয় অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এতে শিক্ষক লাঞ্ছিতের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের জোর দাবি জানানো হয়।
প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ঘোষিত কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি চলমান থাকায় নির্বাচনে দায়িত্ব পালনে প্রয়োজনীয়সংখ্যক জনবল পাওয়া যায়নি। ফলে ২৫ সেপ্টেম্বরের পরিবর্তে নির্বাচন ১৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে। কমিশনের সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত হয়। ২০ সেপ্টেম্বর পৌষ্য কোটাকে কেন্দ্র করে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এতে উপ-উপাচার্য ড. মাঈন উদ্দিনকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে ক্যাম্পাসে কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করেন শিক্ষক-কর্মকর্তারা। অভিযুক্তদের শাস্তি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন চলবে বলে জানান তাঁরা। এতে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকায় ক্যাম্পাস ছাড়ছেন ভোটাররা। ছাত্রদলসমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী শেখ নূর উদ্দিন আবীর বলেন, ‘৪৮ ঘণ্টা আগে রাকসু নির্বাচন নিয়ে যে উৎসবমুখর অবস্থা ছিল, তা এখন আর নেই। ভোটাররা অনেকেই বাসায় চলে গেছেন। এ অবস্থায় অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্ভব নয়। আমরা দুর্গাপূজার পর উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন চাই।’
গতকাল দুপুরে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে সর্বজনীন শিক্ষার্থী পরিষদ, রাকসু ফর রেডিক্যাল চেঞ্জ, ইউনাইটেড ফর রাইটস ও স্বতন্ত্র পরিষদ।
যৌথ বিবৃতিতে সর্বজনীন শিক্ষার্থী পরিষদের ভিপি প্রার্থী তাসিন খান বলেন, তিন দিন পর নির্বাচন। এখন শাটডাউন চলছে। এতে অধিকাংশ ভোটার বাড়ি চলে যাচ্ছে। নির্বাচনি আমেজ নেই।
এই মুহূর্তে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না। কমিশন যদি উৎসবমুখর পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারে, তাহলে ২৫ সেপ্টেম্বর নির্বাচন দিক। অন্যথায় নির্বাচন নয়।