এসবিএসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. মোখলেসুর রহমান বলেছেন, ব্যাংকিং ব্যবসা পরিচালনায় আমরা সহজ ও নিরাপদ ব্যাংকিংকে সর্বাধিক গুরুত্ব প্রদান করি। নগদ লেনদেনে নানান প্রকারের ঝুঁকি থাকে। সেসব ঝুঁকি কমাতে মোবাইল ওয়ালেটে ব্যাংকিং সেবা অর্থাৎ অ্যাপে আর্থিক সেবা বড় ধরনের ভূমিকা রাখছে। অ্যাপের প্রতিটি লেনদেনে দুই স্তরবিশিষ্ট নিরাপত্তাব্যবস্থা (টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন) থাকায় জালজালিয়াতির আশঙ্কাও কম। অ্যাপভিত্তিক লেনদেনের কারণে ব্যাংকিং সেবা এখন আগের চেয়ে অনেক দ্রুত ও সহজ। শাখায় না গিয়েই গ্রাহকের অর্থ স্থানান্তর, ক্রেডিট কার্ড ও অন্যান্য বিল পরিশোধ, মোবাইল রিচার্জ, নগদ অর্থ উত্তোলন, ফি জমা ইত্যাদি করার সুযোগ তৈরি হয়েছে। এর ফলে ব্যাংকের কার্যক্রমও বেশি স্বচ্ছ হয়েছে এবং আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বেড়েছে।
বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। ইঞ্জিনিয়ার মো. মোখলেসুর রহমান বলেন, এসবিএসি ব্যাংকের মোবাইল ওয়ালেট সার্ভিস ‘বাংলাপে’ অ্যাপ ২০১৮ সালে যাত্রা হয়। এ অ্যাপের মাধ্যমে গ্রাহকরা ঘরে বসেই যে কোনো ব্যাংক হিসাবে সহজে অর্থ স্থানান্তর, কিউআর কোডে শাখা থেকে চেক ছাড়াই টাকা উত্তোলন, যে কোনো ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের বিল পরিশোধ, মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবে লেনদেন, ইউটিলিটি বিল পরিশোধ, মোবাইল টপআপ ইত্যাদি ২৪/৭ সেবা গ্রহণ করছেন। এতে গ্রাহকের সময় ও খরচ সাশ্রয় হচ্ছে। গ্রাহকসন্তুষ্টি থাকায় বাংলাপে ব্যবহারে সবাই আগ্রহী হচ্ছেন। এসবিএসি ব্যাংকের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, প্রতি মাসে প্রায় ৯০ কোটি টাকার লেনদেন ‘বাংলাপে’র মাধ্যমে সম্পাদন হচ্ছে। নগদ লেনদেনের ঝুঁকি না থাকা এবং সময়সাশ্রয়ী ব্যাংকিং ডিজিটাল ওয়ালেট সেবা ভবিষ্যতে আরও জনপ্রিয় হবে। আমার বিশ্বাস, আগামীতে ক্রেডিট কার্ড, ক্ষুদ্র ঋণের আবেদন প্রক্রিয়াসহ অন্যান্য বিষয় ফিচার অ্যাপে সংযুক্ত করলে ডিজিটাল ব্যাংকিং দেশের মূলধারায় চলে আসবে।
এসবিএসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান বলেন, এসবিএসি ব্যাংক ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ে সাইবার নিরাপত্তা বিধানকে অত্যন্ত জরুরি মনে করে। গ্রাহকের সরাসরি উপস্থিতি ছাড়াই যেহেতু ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা প্রদান করা হয়, সেহেতু বিএফআইইউ ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা যথাযথভাবে পরিপালনকরত অ্যাপভিত্তিক লেনদেনে ঝুঁকি অধিকাংশে কমানো সম্ভব। পাশাপাশি গ্রাহক সচেতনতা বাড়ানো দরকার। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাপেতে আমরা আধুনিক এনক্রিপশন, দুই স্তরবিশিষ্ট নিরাপত্তা ও নিয়মিত মনিটরিং চালু রেখেছি। এ ছাড়া গ্রাহকদের সচেতন করতে এসএমএস, নোটিফিকেশন অ্যালার্ট ও গণসচেতনতামূলক প্রচার চালানো হয়।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে গ্রাহকরা বাংলাপে অ্যাপ ব্যবহার করে এনপিএসবি ও ইএফটিএনে অর্থ স্থানান্তর, শাখা থেকে টাকা উত্তোলন, ক্রেডিট কার্ড, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানিসহ অন্যান্য ইউটিলিটি বিল পরিশোধ, বিকাশ-নগদ-উপায় ইত্যাদি মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবে অর্থ পাঠানো ও গ্রহণ, ব্যালান্স ও মিনি স্টেটমেন্ট দেখা, বিভিন্ন ফি, চার্জ পরিশোধসহ নানাবিধ ব্যাংকিং সেবা পাচ্ছেন। ইঞ্জিনিয়ার মো. মোখলেসুর রহমান বলেন, আমরা বাংলাপে অ্যাপকে দেশের অন্যতম নিরাপদ ও উদ্ভাবনী ব্যাংকিং প্ল্যাটফর্মে পরিণত করতে চাই। ভবিষ্যতে নতুন ব্যাংক হিসাব খোলা, ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য সহজে ঋণ আবেদন এবং অনুমোদন, রেমিট্যান্স গ্রহণ ও স্থানান্তর, ঋণের কিস্তি পরিশোধসহ আরও নতুন ফিচার যুক্ত করার পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে।