হাতি তাড়াতে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী গারো পাহাড়ের কৃষকরা। কয়েকদিনে পানিহাটা ফেকামারী এলাকায় অর্ধশতাধিক কৃষকের প্রায় ৩০-৪০ একর জমির পাকা আমন ধান খেয়ে ও পিষ্ট করে নষ্ট করেছে হাতির দল।
এলাকাবাসী জানায়, হাতিগুলো দিনের আলোতে পার্শ্ববর্তী পাহাড়ে অবস্থানের পর রাতের আঁধার নামলেই লোকালয়ে নেমে তান্ডব চালায় আমনের ফসলি জমিতে। এ অবস্থায় শত শত কৃষক রাত জেগে পাহারা বসিয়ে, পটকা ফাটিয়ে ও মশাল জ্বালিয়ে লাঠি হাতে সরব থাকলেও বন্ধ করা যাচ্ছে না হাতির তান্ডব।
পাহাড়ি বন্য হাতির দল ভারতীয় মেঘালয় রাজ্যের চেরেংপাড়া পাহাড়ি অঞ্চলে অবস্থান করে দিনে পালিয়ে থাকে গহীন অরণ্যে। এরপর সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে নেমে আসে পাকা ফসলের জমিতে। হাতির এমন আচরণে দিশেহারা ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক।
আশালতা নেংমিনজা ও হাসমত আলীসহ কয়েকজন কৃষক জানান, প্রতিবছর পাহাড়ি এই হাতির দল ফসল ও মালের ব্যাপক ক্ষতি করছে। চলতি বছর বন্যহাতির দল প্রথমে বোরো ধান, গাছের কাঁঠাল খেয়ে সাবাড় করে ফেলে। পরে আমনের বীজতলা মাড়িয়ে নষ্ট করে। এখন আমনের পাকা ধান বিনষ্ট করছে। খাদ্যের সন্ধানে অভুক্ত হাতিগুলো লোকালয়ে এসে ছুটোছুটি করে। হাতির তান্ডবে এখন তাদের রাত কাটে নির্ঘুমে।
পানিহাটা এলাকার এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিমের সভাপতি যোসেফ মারাক বলেন, কয়েকদিন ধরে আমন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি করছে হাতির দল। বন্যহাতির আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে আমরা প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ওয়াসিফ রহমান বলেন, ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে পরবর্তী আবাদের জন্য তাদেরকে উচ্চ ফলনশীল ধানবীজ ও সার বিতরণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হেলেনা পারভীন বলেন, এ বিষয়ে ইতিমধ্যে একটা প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। সেচ্চাসেবক ও প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের তালিকা চাওয়া হয়েছে। তালিকা পেলে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন চার্জার লাইট বিতরণ করা হবে। যা হাতি তাড়াতে সহায়তা করবে। এছাড়াও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিশেষ প্রণোদনার মাধ্যমে তাদেরকে সহযোগিতা করা হবে।
বিডি প্রতিদিন / অন্তরা কবির