চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে বীর মুক্তিযোদ্ধা বজলার রশিদ সনু উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতিকুল ইসলাম টুটল খান কর্তৃক লাঞ্ছিতের ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও চলছে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগসহ নানান মন্তব্য। একে অপরের বিরুদ্ধে করা হচ্ছে বিষোদাগার।
জানা গেছে, সাবেক শিবগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বজলার রশিদ সনুকে গত ১৬ ডিসেম্বর শিবগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় বক্তব্য দেয়ার সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতিকুল ইসলাম টুটল খান লাঞ্ছিত করেন। এ সময় মঞ্চে থাকা স্থানীয় সংসদ সদস্য ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুলসহ ইউএনও পরিস্থিতি শান্ত করেন।
এ ঘটনার পর উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতিকুল ইসলাম টুটল খানের বিচার দাবি করে মানববন্ধন করেন। পরে উপজেলা আওয়ামী লীগের ব্যানারে সংবাদ সম্মেলন করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতিকুল ইসলাম টুটল খান দাবি করে বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা বজলার রশিদ সনু বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী ও নির্বাচন নিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ বক্তব্য দিলে তাকে থামানো হয়েছে। কিন্তু তিনি ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন।
এদিকে ওই ঘটনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও শুরু হয়েছে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগসহ নানান মন্তব্য। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেন জেলার বীর মুক্তিযোদ্ধারা। এসময় বীর মুক্তিযোদ্ধারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতিকুল ইসলাম টুটল খানের বিচারসহ ঘটনাটির প্রশাসনিক তদন্তেরও দাবি জানান। এছাড়া ঘটনাটির মুক্তিযোদ্ধারা আদালতে মামলা দায়ের করবেন বলেও ঘোষণা দেন।
এ ব্যাপারে আতিকুল ইসলাম টুটুল খাঁন বলেন, বজলুর রশিদ সনু বহুমাত্রিক মানুষ। তিনি অধিক সময় মাদকাসক্ত থাকেন। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস অনুষ্ঠানে তিনি মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন এবং প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় নির্বাচন নিয়ে বাজে মন্তব্য করায় তার বক্তব্য বন্ধ করা হয়েছে। অন্যদিকে বীর মুক্তিযোদ্ধা বজলার রশিদ সনুর মেয়ে শারমিন আক্তার সুমি বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে আমার পিতা শিবগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন জানিয়েছেন যেন, দুলর্ভপুর ইউনিয়নে আগামীতে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ হয়। সে সময় তার পিতাকে আতিকুল ইসলাম টুটুল খাঁন লাঞ্ছিত করে।
এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওদুদ বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা বজলুর রশিদ সনুকে শত শত মানুষের সামনে লাঞ্ছিত করা হয়েছে, না হয়নি তা তদন্ত করা হলে সঠিক বিষয়টি বেরিয়ে আসবে। তাই এ বিষয়ে তিনি তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি করেন। অন্যদিকে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. সামিল উদ্দিন শিমুল এমপি বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা বজলার রশিদ সনু তার বক্তব্যে চলমান নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুললে তার মাইক কেড়ে নেয়া হয়। আমি ওই সময় বীর মুক্তিযোদ্ধা বজলার রশিদ সনুর কাছে সকলের পক্ষ থেকে হাতজোড় করে মাফ চেয়েছি।
বিডি প্রতিদিন/এএ