অবৈধ ভাবে নেত্রকোনায় ফসলি জমিতে গড়ে উঠেছে অসংখ্য ইটের ভাটা। ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে ভাটার আশপাশের কৃষি জমি। প্রতিবছরই লোকশানের মুখে থেকেও আহার জোগাতে চাষবাস করেন প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকরা। নানা অসুখ বিসুখেও ভুগছে এখানকার মানুষ। ভুক্তভোগীদের কথা শুনছেন না কেউ। বিভিন্ন মহলে নানা ভাবে চাঁদা দিয়ে ম্যানেজ করে চলে এসকল ভাটা ব্যবসায়ীরা। প্রশাসনের নীরব ভূমিকায় ক্ষোভ স্থানীয়দের। এদিকে পরিবেশ অধিদপ্তরের ভূমিকা নিয়েও রয়েছে জনমনে নানা প্রশ্ন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কৃষিতে উদ্বৃত্ত ২৭৪৭.৯১ বর্গ কি.মি. আয়তনের জেলায় বর্তমানে মাত্র ৪,৭৩,০০০.০০ একর কৃষি জমি। পরিমাণ আরো বেশি থাকলেও বর্তমানে কমে এখন যেটুকু রয়েছে সেটিরও বেশির ভাগ জমিতে তেমন ফসল আবাদ হচ্ছে না। পরিবেশ দূষণের ফলে দিনে দিনে কমছে জমির উর্বরতা। ফলে জেলায় মাত্র দেড় লাখের অধিক কিছু জমিতে হয় চাষাবাদ।
জেলায় ৫৪ টি ইটের ভাটা যেগুলোর ৪৮ টিই অবৈধ। নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের কোনো ছাড়পত্র। তবুও এসকল ভাটাগুলো চলছে প্রভাব খাটিয়ে। প্রায় সবগুলোই নিয়মের তোয়াক্কা না করে কৃষি জমি নষ্ট করে গড়ে উঠেছে। বৈধ ৬ টির মধ্যেও দেখা গেছে অনেকগুলো স্কুলের ও মেইন সড়কের পাশে। পাশাপাশি কৃষি জমিতো রয়েছেই। জানা গেছে, অবৈধ ভাটাগুলোর মধ্যে জেলা সদরে ৮টি, পূর্বধলায় ৭টি, কেন্দুয়ায়, ১৩ টি, বারহাট্টায় ২টি, মদন ৩ টি, মোহনগঞ্জ ৩ টি, কলমাকন্দা ৮ টি ও দুর্গাপুরে ৩ টি রয়েছে।
পরিবেশ সংরক্ষণকারী গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিকের সমন্বয়কারী মো. অহিদুর রহমান, জেলা সুজনের সভাপতি সিনিয়র সাংবাদিক শ্যামলেন্দু পালসহ এলাকাবাসী আরো জানান, ভাটার পাশের স্কুলগুলো কোমলমতি শিশুদের জন্য ক্ষতিকর। ফসলের উৎপাদন দিনে দিনে কমে আসছে। জীব বৈচিত্র্য হারাচ্ছে। অথচ তারা সব কিছু ম্যানেজ করে এসকল প্রতিষ্ঠান চালায়। অচিরেই পরিবেশ বিনষ্টকারী প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সাবিকুন্নাহার জানান, তারা নিয়মিত মনিটরিং করছেন। জেলায় মাত্র অফিস হয়েছে বছরখানেক। কিন্তু এসকল ভাটাগুলো স্থাপন করা দীর্ঘদিন ধরে। চারটির মামলা চলছে। ৬০ টির মতো ভাটা ছিলো। তারা অভিযান চালিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে।
জেলা প্রশাসক কাজি মো. আবদুর রহমান কোনো ধরনের অভিযোগ পেলে তা ক্ষতিয়ে দেখার এবং ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল