লালমনিরহাট পৌরসভার একটি ময়লার স্তুপ থেকে জীবিত উদ্ধার সেই সেই নবজাতক কন্যা শিশুর পরিচয় মিলেছে। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি পৌরসভার কালীবাড়ি এলএসডি গোডাউনের পাশ থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে নবজাতকের মা ইভা আক্তার (১৭), নানী লুৎফা (ইভার মা) ও জৈবিক বাবা জয়নাল আবেদীনকে (৩০) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহা আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ জানায়, একদিন বয়সী নবজাতক কন্যা শিশুকে উদ্ধার করে লালমিনরহাট সদর হাসপাতালের শিশু নবজাতক ওয়ার্ডে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। এ বিষয়ে ওইদিন উদ্ধারকারী এসআই মো. রফিকুল ইসলাম অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে থানায় একটি লিখিত এজাহার দায়ের করেন। এরপর শিশুটির পরিচয় শনাক্তে মাঠে নামে পুলিশ। পরে একাধিক সোর্সের মাধ্যমে উদ্ধার হওয়া সেই শিশুর মায়ের পরিচয় উদঘাটন করা হয়।
অনুসন্ধানে পুলিশ জানতে পারে, নবজাতকের মা ইভা শহরের সাহেবপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তিনি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। তার বড় বোনের স্বামীর সাথে অবৈধ প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে এবং সম্পর্কের সুযোগে দুলাভাই শারীরিক সম্পর্ক করেন। এতে ইভা গর্ভবতী হয়। ১৩ ফেব্রুয়ারি ইভা অসুস্থ হলে তার মা বিষয়টি বুঝতে পারে। পরে জন্ডিসের কারণে পেটে ব্যথা বলে সদর হাসপাতালে ভর্তি করান। পরদিন দুপুরে সবার অগোচরে হাসপাতালের বাথরুমে সন্তান প্রসব হয়।
এমন অবস্থায় মা ইভা, ইভার মা ও দুলাভাই হাসপাতালের কাউকে কিছু না বলে বাচ্চাসহ হাসপাতাল থেকে পালিয়ে আসে। পরে বাচ্চাটিকে ময়লার স্তুপে ফেলে দেয়। পথচারীরা ডাস্টবিনে ফুটফুটে এক নবজাতককে দেখতে পেয়ে ৯৯৯ কল দিলে পুলিশ এসে সেখান থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের নবজাতক ওয়ার্ডে ভর্তি করান। এ ঘটনায় নবজাতকের মা, নানী ও প্রাথমিকভাবে জ্ঞাত নবজাতকের জৈবিক বাবাকে এসআই রফিকুল ইসলামের করা মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে লালমনিরহাটের পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা জানান, এটি একটি লোমহর্ষক ঘটনা। নবজাতকটিকে উদ্ধারের পরই তার পরিচয় শনাক্তের জন্য পুলিশ মাঠে নামে। আমরা সফল হয়েছি। আশা করছি শিশুটি তার আপন ঠিকানা ফিরে পাবে। তবে তার আগে এরকম ন্যক্কারজনক ঘটনার জন্য দোষীদের অবশ্যই বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই