লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার মেঘনা নদীতে মিলছে না কাঙ্ক্ষিত রূপালী ইলিশ। গত ১ মে থেকে জাল, নৌকা, ট্রলার ও বিভিন্ন মাছ ধরার সরঞ্জামাদি নিয়ে এ উপজেলার প্রায় সাড়ে ৭ হাজার জেলে ইলিশ ধরতে মেঘনা নদীতে নামেন। নদীতে জাল ফেললেও জেলেদের জালে মিলছে না রূপালী ইলিশ। ইলিশের ভরা মৌসুম শুরু হলেও রায়পুরের মেঘনায় চলছে ইলিশের চরম আকাল। এতে বিপাকে পড়েছেন জেলে সম্প্রদায়।
অনেকে বলছেন, এবার ব্যাপক হারে জাটকা নিধন হওয়ায় জেলেদের জালে ইলিশ ধরা পড়ছে না। যৎসামান্য ইলিশ ধরা পড়লেও দাম অনেক হওয়ায় সাধারণ ক্রেতা তা কিনতে পারছে না।
উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, চাঁদপুরের ষাটনল থেকে লক্ষ্মীপুরের আলেকজান্ডার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার নদী এলাকাকে ইলিশের অভয়াশ্রম ঘোষণা করা হয়েছে। ওই এলাকায় ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত সব ধরনের জাল ও মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছিল সরকার। কাঙ্ক্ষিত ইলিশের আশায় কোমড় বেঁধে নদীতে নামে জেলেরা।
সরেজমিন ঘুরে কয়েকটি মাছঘাটে দেখা যায়, দূর-দুরান্ত থেকে মাছের পাইকাররা এসে ইলিশ কিনতে না পারায় খালি হাতে ফিরে যাচ্ছেন। মেঘনা নদীর জালিয়ার চর, চরবংশী, সরদার অ্যান্ড মোল্যা মৎস্য ঘাট ও চরলক্ষ্মী এলাকার জেলে আইনুদ্দিন, সেলিম বকাউল, রিপন সরদার, মানিক সরদার ও ছিডু মাঝি বলেন, নদীতে লাখ লাখ টাকার জাল, নৌকা নিয়ে মাছ ধরতে নেমেছি। প্রতিদিন আমাদের ৬ থেকে ৭ হাজার টাকার বেশি খরচ হয়। কিন্তু দিন-রাত নদীতে জাল ফেলে মাত্র আড়াই থেকে ৩ হাজার টাকার মাছ পাই। এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে জাল, নৌকা তৈরি করেছি। ভেবেছিলাম ইলিশ শিকার করে দায়-দেনা পরিশোধ করব। উল্টো নতুন করে বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিতে হচ্ছে। এ নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছি। ইলিশ ধরা না পড়লে ছেলে-মেয়ে নিয়ে চরম মানবেতর জীবন-যাপন করতে হবে। অন্যদিকে ধার-দেনা পরিশোধ করতে না পারায় দিন দিন বাড়ছে দুশ্চিন্তা।
উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন বলেন, এ বছর বৃষ্টিপাত শুরু না হওয়ায় নদীতে তেমন ইলিশ ধরা পড়ছে না। এ মাসের শেষের দিকে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়বে বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেন তিনি।
বিডি প্রতিদিন/কালাম