ফেনীতে গত ২৪ ঘণ্টায় তিনজনসহ ৬ মাসে ৪২ জন আত্মহত্যা করেছে। বৃহস্পতিবার রাতে দাগনভূঞা পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের নূর নবী ভেন্ডর বাড়ির মোস্তাক আহমেদ স্বপনের বড় ছেলে উপম (১৮) আত্মহত্যা করেন।
বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আত্মহত্যা করেন একই উপজেলার পূর্ব চন্দ্রপুর ইউনিয়নের আমু ভূঞার হাট হাছানিয়া দাখিল মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ফারজানা আক্তার (১৪)। সে পাশের রাজাপুর ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামের বেলাল হোসেনের মেয়ে। মাদ্রাসা সুপারের ওপর অভিমান করে সে আত্মহত্যা করেছে বলে জানা যায়। এ ঘটনায় মাদ্রাসার সুপারসহ তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ফুলগাজী উপজেলার সদর ইউনিয়নের নিলখী গ্রামের কুয়েত প্রবাসী আবু জাফর ওরফে বাবুর স্ত্রী সোনিয়া আক্তার (২৮) বিষপানে আত্মহত্যা করে। সোনিয়া পরশুরাম উপজেলার কাউতলী গ্রামের মৃত তাজুল ইসলামের মেয়ে।
ফেনীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বদরুল আলম মোল্লা জানান, ডিসেম্বর থেকে আজ পর্যন্ত জেলায় আত্মহত্যা করেছে ৪২ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ২৩ এবং নারী ১৯ জন। আত্মহত্যার কারণ খুঁজতে গিয়ে আমরা জেনেছি, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পারিবারিক কলহ, বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের জেরে হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে প্রেমে ব্যর্থতা, অভিমান ও ক্ষোভের কারণেও হয়েছে। আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়ে যাওয়ায় জেলা পুলিশ আত্মহত্যা রুখতে সচেতনতামূলক সভার আয়োজন করেছে।
দাগনভূঞা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান ইমাম জানান, বৃহস্পতিবার দুই শিক্ষার্থীসহ সম্প্রতি উপজেলায় কয়েক শিক্ষার্থী ও প্রবাসীর স্ত্রী আত্মহত্যা করেছে। অথচ এসব শিক্ষার্থীর ভালোমন্দ বোঝার বয়সও হয়ে ওঠেনি। বিভিন্ন কারণে তারা আত্মহত্যা করছেন।
ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার মো. ইকবাল হোসেন ভূঞা বলেন, সম্প্রতি হাসপাতালে নিয়মিত আত্মহত্যার মরদেহ আসছে। যাদের বেশির ভাগই শ্বাসরোধে আত্মহত্যা।
সম্প্রতি ফেনী জেলা ও দায়রা জজ বেগম জেবুন্নেসা বলেন, দেশের আইনে ১৮ বছরের নিচে সবাই শিশু। শুধু শিশুই নয়, দণ্ডবিধির ৩০৫ ধারায় কাউকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দিলে সেটি যদি আদালত থেকে প্রমাণিত হয়, তাহলে সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে। আত্মহত্যায় প্ররোচনাকারীদের বিরুদ্ধে যদি আইন বিভাগ থেকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা যায়, তাহলে সমাজে ইতিবাচক সাড়া পড়বে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই