জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান বলেছেন, ‘আমাদের লক্ষ্য টেকসই উন্নয়নের মানবিক বাংলাদেশ। যেই বাংলাদেশ সৃষ্টির পেছনে রয়েছে ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ। দুই লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমহানির করুণ ইতিহাস। যাঁদের স্বপ্নের কানায় কানায় ছিল একটি বৈষম্যহীন আদর্শনিষ্ঠ বাংলাদেশ।’
মঙ্গলবার গাজীপুরের চৌরাস্তায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত বিজিআইএফটি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (বিআইএসটি) আয়োজিত বঙ্গবন্ধু কর্নার উদ্বোধন, স্থায়ী ক্যাম্পাসের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন, কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা ও সনদ প্রদান অনুষ্ঠান-২০২২ এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন উপাচার্য।
উপাচার্য ড. মশিউর রহমান আরও বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য ২০৪১ সালে সবুজ-শ্যামল বাংলাদেশে সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট নিশ্চিত হবে। আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র না। আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী সেইসব ধনবান রাষ্ট্র না, যাদের ধনবান হওয়ার কিছুদিন পরে ধর্মের নামে, সংস্কৃতির নামে অথবা আধিপত্যের নামে যুদ্ধ করতে হয়। আমাদের সুস্পষ্ট আকাক্সক্ষা- গণতান্ত্রিক, সমাজতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ দেশ গড়ে তোলা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচিতে আদর্শনিষ্ঠ, কল্যাণকামী, শোষিতের গণতন্ত্রের কথা বলেছেন। ২০৪১ সালে এদেশে শোষিতের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হবে। বঙ্গবন্ধু কন্যা এ দেশে লক্ষ লক্ষ শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছেন। এটি কোনো ধনবান রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য নয়। এটি মানবিক বাংলাদেশের বৈশিষ্ট্য। এ কারণে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াবেই।’
তরুণদের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ার আহŸান জানিয়ে উপাচার্য বলেন, ‘যারা দেশ নিয়ে নেতিবাচক কথা বলেন, যারা নতুন প্রজন্ম নিয়ে হতাশার কথা বলেন। আমি তাদের ঘোরবিরোধী। আমি মনে করি নতুন প্রজন্ম সঠিক ধারায় আছে। তারা সৃজনশীল, উদ্যোমী। বরং আপনারা যারা দুর্নীতিতে নিমজ্জিত হয়ে আছেন, অসততায় নিমজ্জিত হয়ে আছেন। আপনাদের সেই কালোহাত বন্ধ করুন। নিশ্চয়ই আমাদের তরুণ প্রজন্ম লাল-সবুজের পতাকা নিয়ে বাংলাদেশকে তার কাক্সিক্ষত জায়গায় নিয়ে যাবে। কারণ আমরা সেই প্রজন্ম যারা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উত্তর বাংলায় মঙ্গা দূর করেছি, কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ ছাড়া পাহাড়ে শান্তি চুক্তি করেছি। দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পাশাপাশি যে পরিমাণ সামাজিক বেষ্টনি আছে, যে পরিমাণ ওয়েলফেয়ার স্টেপ নেয়া হয়েছে, তা পৃথিবীর অনেক উন্নত দেশেও নেই। পৃথিবীর খুব কম দেশ আছে দেশের শহরগুলো ঘুমায় না। আমাদের শহরগুলো ঘুমায় না। এখানকার মানুষ অহর্নিশ পরিশ্রম করে। এসবের মধ্যদিয়ে আমরা একটি কাক্সিক্ষত স্বপ্নের জায়গায় পৌঁছাবো এটা আমার দৃঢ় বিশ্বাস।’
প্রকৌশলী আবদুল আজিজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম, অগ্রণী মডেল কলেজের সভাপতি আবদুল আলিম, প্রফেসর নুরুল আমিন, মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম, আবদুস সালাম প্রমুখ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বিআইএসটির অধ্যক্ষ মো. দেলোয়ার হোসাইন।
বিডি প্রতিদিন/এএম