রংপুরে চামড়া ক্রয় করতে এখন পর্যন্ত ট্যানারি মালিকরা আসেনি। ফলে প্রায় ৩০ হাজার পিস গরু ও খাসির চামড়ায় লবণ মাখিয়ে ক্রেতার অপেক্ষায় বসে আছেন ব্যবসায়ীরা। ট্যানারি মালিকদের সিন্ডিকেট ভাঙতে না পারলে ব্যবসায়ী পুঁজি হারিয়ে পথে বসার আশঙ্কা করছেন। এদিকে, প্রতিবছর বাড়ি বাড়ি গিয়ে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা চামড়া ক্রয় করে আড়তে দিলেও এবার মৌসুমি ব্যবসায়ীদের দেখা যায়নি। ফলে আড়তগুলোতে চামড়ার আমদানি কম হয়েছে।
চামড়া ব্যবসায়ী আজাহার আলী বলেন, এক বস্তা লবণের দাম ৯৫০ টাকা। এই লবণে ৮ থেকে ১০ চামড়া সংরক্ষণ করা যায়। এমনিতে চামড়ার দাম নেই। তার ওপর লবণের দাম বেশি হওয়ায় তা চামড়া ব্যবসায়ীদের কাছে মড়ার ওপর খাড়ার ঘাঁয়ের মতো হয়ে দাঁড়িয়েছে।
চামড়া ব্যবসায়ীরা বলেন, এখন পর্যন্ত কোনো ট্যানারি মালিক চামড়া কিনতে আসেনি। জেলা সদরে হাতে গোনা ক’জন ব্যবসায়ী ১৫ থেকে ২০ হাজার পিস চামড়া ক্রয় করে লবণ মেখে স্তুপ করে রেখে দিয়েছেন। উপজেলা পর্যায়েও খুব সামান্য চামড়া ক্রয় করা হয়েছে। সব মিলিয়ে জেলায় ৩০ হাজার পিসের মতো চামড়া ক্রয় করেছেন ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীদের আশঙ্কা, ট্যানারি মালিকরা চামড়া ক্রয় করতে না এলে চামড়া সংরক্ষণে যে পরিমাণ লবণ ও অন্যান্য ব্যয় হয়েছে, সেই দামও উঠবে না।
ট্যানারি মালিকদের সিন্ডিকেটের কারণে রংপুরে চামড়ার ব্যবসায় মারাত্মক ধস নেমেছে। বর্তমানে চামড়ার দাম কম হওয়ায় যারা কোরবানি দিয়েছেন তাদের অনেকেই মৌসুমী ব্যবসায়ীদের কাছে চামড়া বিক্রি করতে না পেরে মাদ্রাসায় দান করে দিয়েছেন।
ব্যবসায়ীরা আরও জানান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বেঁধে দেয়া দামের চেয়ে অনেক কম দামে চামড়া কিনতে বাধ্য হয়েছে রংপুরের ব্যবসায়ীরা। তাই ব্যবসায়ীরা রংপুরে ট্যানারি শিল্প গড়ে তোলার দাবি জানিয়েছেন। এবছর গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে আড়াই’শ থেকে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকায়। এবার চামড়ার দাম কম হওয়ায় অনেকেই এতিমখানায় অথবা মাদ্রাসায় চামড়া দান করেছেন। ওই সব চামড়া লবণ মেখে রেখে দেয়া হয়েছে। দাম বৃদ্ধি পেলে চামড়া বাজারে আসতে পারে বলে ধারণা করছেন ব্যবসায়ীরা।
রংপুর চামড়া ব্যবসায়ী আব্দুল লতিফ খান বলেন, চামড়া ব্যবসার ধস ঠেকাতে হলে রংপুরে ট্যানারি শিল্প গড়ে তুলতে হবে। তা না হলে প্রতিবছরই চামড়া ব্যবসায়ীরা পুঁজি হারিয়ে পথে বসবে।