ঈদের ছুটিতে বগুড়ার বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে ছিল মানুষের উপচে পড়া ভিড়। বগুড়ার ঐতিহাসিক মহাস্থানগড়, বেহুলার বাসর ঘর, জাদুঘর, গোবিন্দ ভিটা, মমইন ইকো পার্ক, পৌর পার্ক, শহীদ খোকন পার্কসহ সারিয়াকান্দি যমুনা ও বাঙালী নদীকে ঘিরে প্রাণ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। ঈদের পরের দিনও ছিল উল্লেখ্যিত এলাকায় সাধারণ মানুষের ভিড়।
ঈদ উল আযহার ছুটিতে কর্মময় জীবনের ব্যস্ততা ছেড়ে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে নিজেদের পরিবারের সাথে ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে ছুটে এসেছেন বগুড়ায়। ঈদের দিন থেকেই তারা বেরিয়ে পড়েছিল বিভিন্ন স্থানে একটু বিনোদনের জন্য। পরিবার নিয়ে দিনভর আনন্দ করে কাটিয়েছে।
জানা যায়, বগুড়ার মমইন ইকো পার্কে নানা বয়সের হাজার হাজার নারী-পুরুষ ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে এসেছেন। বিশেষ করে শিশু কিশোর কিশোর, যুবক-যুবতীসহ পরিবারের বিভিন্ন বয়সের সদস্যরা আনন্দে মেতে উঠেছে।
এখানে রয়েছে শিশুদের জন্য নাগরদোলা, চরকি, গাড়ি ভ্রমণ, মিউজিক নৌকা, বাউঞ্চি ব্যলেন্স, বড়দের জন্য রয়েছে নৌকা ভ্রমণ, দোলনা, ঘোড়ার গাড়ি। এছাড়াও আছে নানা ধরনের সুস্বাদু খাবার। পার্কের চারিদিকে রয়েছে লেক। ঝরনা সহ আছে সুন্দর সুন্দর দৃশ্য। প্রকৃতির হাওয়াই মনটা ভরে যায় বেড়াতে ভ্রমন পিপাসুদের। যমুনা পাড়ে ঈদের ছুটিতে সমুদ্রের আমেজ নিতে শত শত মানুষ ভীড় জমিয়েছে। বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার কুতুবপুর, কালিতলা, এলাকার যমুনা পাড়ে শত শত মানুষ প্রিয়জনদের নিয়ে আনন্দ ভ্রমনে এসেছে। কেউবা কার, কেউবা সিএনজি অটোরিক্সা, কেউবা মোটরসাইকেল নিয়ে ঈদের ছুটির অবসর বিনোদনে ছুটে এসেছে যমুনা পাড়ের এসব জায়গায়। প্রতি বছরই এসব জায়গায় ভীড় জমায় লোকজন। যমুনা পাড়ের এসব জায়গায় নদী সংরক্ষনে সিমেন্টের বøক দিয়ে সুন্দর করে বেধে দেয়ায় পরিবার-পরিজনদের নিয়ে নদীপাড়ে বসে ঘন্টার পর ঘন্টা গল্প করে সময় পাড় করে দিয়েছেন অনেকেই। বিশাল যমুনার ঢেউ দেখে অনেকেই আনন্দ উদযাপন করেন। কিছু পরিবার নৌকা ভাড়া নিয়ে ভ্রমন করেন নদী।
শহিদ নামের এক যুবক বললেন, আট মাস আগে বিয়ে করেছেন। চাকুরী করেন ঢাকায়। ঈদের ছুটিতে বাড়ী এসে বিনোদনের জন্য সারিয়াকান্দির যমুনা পাড়ে এসেছেন। অনেকটা সুমদ্রের স্বাদ পাওয়া যায় এখানে।
কথা হয় মহাস্থানে ঘুরতে আসা দুপচাঁচিয়া উপজেলার রশিদুল ইসলামের সাথে। তিনি বললেন, প্রতি ঈদেই তিনি স্ত্রী, ছেলে বউ, নাতী- নাতনীদের নিয়ে বেড়াতে আসেন। মহাস্থানের এসব নিদর্শন দেখতে ভালো লাগে। তাছাড়া নতুন প্রজন্মদের মহাস্থানের প্রাচীন ইতিহাস তুলে ধরতে হবে।
এদিকে মমইন ইকো পার্কে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। এখানে বেড়াতে আসা শামীমা আক্তারের সাথে কথা হলো, তিনি জানান, একটু বিনোদনের জন্য ছুটে এসেছেন এখানে। ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পরিবারসহ এখানে বেড়াতে এসেছেন। এখানকার পরিবেশ অনেক সুদর। শিশুদের জন্য খেলার জায়গাসহ প্রাকৃতিক দৃশ্য রয়েছে। রয়েছে দৃষ্টিনন্দন পার্ক। এছাড়াও এখানে নিরাপদে চলাফেরা করা যায়।
বগুড়ার ঐতিহাসিক মহাস্থান গড়ে এসেছিল হাজারো মানুষ। মহাস্থানের জাহাজঘাটে, বেহুলার বাসর ঘর ও জাদুঘরে ছিল মানুষের ঢল। এছাড়াও শহরের পৌর পার্ক, ওয়ান্ডারল্যান্ড, শেরপুরের সাউদিয়া পার্কেও ভিড় ছিল চোখে পড়ার মত।
বিডি প্রতিদিন/এএ