ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার হামিরদী, তুজারপুর, ঘারুয়া ইউনিয়নের চার স্থানে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে কমপক্ষে শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছে। ২৭ বাড়ি ও ৮টি দোকান ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। আহতদের ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ভাঙ্গা উপজেলার তুজারপুর ইউনিয়নের তুজারপুর গ্রামে জমি মাপা নিয়ে রসমত মোল্লা ও তার ভাতিজা কিবরিয়া মোল্লার বিরোধকে কেন্দ্র করে দুপক্ষ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। আজ বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) সকালে ও গতকাল বুধবার (১৩ জুলাই) বিকালে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় উভয় পক্ষের কমপক্ষে ২০টি বাড়ি ও দুটি দোকান ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে তুজারপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত সোহরাব ভূইয়ার বাড়িও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে আহত হয় কমপক্ষে ৪০ জন। গুরুতর আহত তিনজনকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বুধবার বিকালের সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ ২ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছুড়েছে।
গত বুধবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে প্রায় রাত ১০টা পর্যন্ত ভাঙ্গা উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের হাজরাকান্দা গ্রামের বাসিন্দাদের সাথে পাশের গোপালগঞ্জ জেলার দিগনগর ইউনিয়নের দিগনগর গ্রামবাসীর দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এ সময় ইটের আঘাতে কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়।
গত বুধবার বিকাল সাড়ে ৪টা থেকে সন্ধ্যা প্রায় ৭টা পর্যন্ত ভাঙ্গা উপজেলার হামিরদী ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের মুনসুরাবাদ গ্রামে বর্তমান ইউপি সদস্য আলম মোল্লার লোকজনের সাথে সাবেক ইউপি সদস্য বাবর আলী মাতুব্বরের লোকজনের সংঘর্ষ চলে। কয়েকশত লোক ঢাল, সড়কি, রামদা, ইট-পাটকেল নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এ সময় কমপক্ষে ২৩ জন আহত হয়। গুরুতর আহত দুইজনকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১১ জনকে ভর্তি করা হয়েছে। এ সময় মুনসারাবাদ বাজারে শহর আলী মোল্লা ও মাজহারুল মোল্লার দোকান ভাংচুর হয়।
তুজারপুর গ্রামের রেক্সনা আক্তার (৫৫) বলেন, ‘যেভাবে আমাদের বাড়ি ঘরে হামলা ও লুটপাট হয়েছে তা দেখার মতো না। কোরবানির মাংস পর্যন্ত লুট করে নিয়ে গেছে।’
গত বুধবার সকালে ভাঙ্গা উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের গঙ্গাধরদী গ্রামে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে তৈয়ব খন্দকার ও মাহতাব খন্দকারের লোকজনের মধ্যে ২ ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়। ৭টি বাড়ি ও ৪টি দোকান ভাংচুরের ঘটনা ঘটে।
ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা মঈনুদ্দীন সেতু বলেন, ‘বুধবার ও বৃহস্পতিবার সংঘর্ষের রোগীদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়েছে। সংঘর্ষে আহত ৪৫ জন ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।’
ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা বলেন, ‘একাধিক স্থানে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ওই এলাকাগুলোতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।’
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা