১৫ আগস্ট, ২০২২ ২২:১২

বগুড়ায় দফায় দফায় বাড়ছে মুরগি ও ডিমের দাম

নিজস্ব প্রতিবেদক,বগুড়া

বগুড়ায় দফায় দফায় বাড়ছে মুরগি ও ডিমের দাম

বগুড়ায় দফায় দফায় বাড়ছে মুরগি ও ডিমের দাম। জ্বালানি তেল ও মুরগির ফিডের মূল্য বৃদ্ধির অজুহাতে ডিমের হালি প্রতি ১০ টাকা আর মুরগির কেজি প্রতি ৪০ টাকা করে বেড়েছে। নিম্ন আয়ের মানুষের সস্তায় প্রোটিন পাওয়া এখন কঠিন হয়ে হয়ে গেছে বলে দাবি করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বগুড়া জেলায় কমপক্ষে ৩ হাজারের বেশি ছোটবড় মুরগির খামার রয়েছে। এর অর্ধেক খামারে ডিম এবং বাকি অর্ধেক খামারে মাংসের জন্য মুরগি পালন করা হয়। বেকার যুবকরা এক সময় মুরগির খামার গড়ে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখলেও এখন পুঁজির অভাবেই এগিয়ে যেতে পারছে না। দিনেদিনে বেড়েছে মুরগির খাবারের মূল্য। খামারে ব্যবহৃত অন্যান্য সামগ্রীর দাম বেড়েছে। খামারিরা বলছেন, মুরগির খাবারে বস্তা প্রতি ২০০ থেকে ৩০০ টাকা দাম বেড়েছে। এর সঙ্গে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির কারণে মুরগি ও মুরগির ডিমের দাম বেড়েছে।

বগুড়ার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, গত এক মাস আগেও ডিম বিক্রি হয়েছে ৩২ টাকা হালি। এরপর ডিমের দাম বেড়ে ৩৮ টাকায় বিক্রি হয়। জ্বালানি তেলের দাম হঠাৎ করে বেড়ে গেলে বাজারে ডিমের দামও বেড়ে যায়। বর্তমান বাজারে মুরগির ডিম প্রতি হালিতে বিক্রি হচ্ছে ৪৮ টাকা করে। আর খামারে প্রতি হালি ডিম ৪২ থেকে ৪৪ টাকা পাইকারি দামে বিক্রি হচ্ছে। ডিমের দামের পাশাপাশি বেড়েছে মুরগির দাম। পরিবহন খরচ ও পোল্ট্রি খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় মুরগির দাম বেড়েছে বলে জানান খামারিরা। চলতি বছরের শুরু থেকেই পোল্ট্রি খাদ্যের দাম বেড়ে যায়। মুরগির খাবারের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে ছোট ছোট খামারগুলো বন্ধ হয়ে যায়। 

বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার খামারি সামছুল আলম জানান, আগে মুরগির খাবারের দাম কম ছিল। এখন মুরগির খাবারের দাম বেড়েছে। এর সঙ্গে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে খামারেও প্রভাব পড়েছে। একটি ডিম উৎপাদনে সাড়ে ৯ থেকে ১০ টাকা খরচ পড়ছে। ডিম ও মুরগির দাম বৃদ্ধি না হলে খামার টিকে রাখা তাদের জন্য কষ্টকর হয়ে দাঁড়াবে।

বগুড়া শহরের ফতেহ আলী বাজারের ডিম ক্রেতা তোফায়েল হোসেন জানান, আগে ডিম ছিল ৩৮ টাকা হালি। আর এখন এক লাফিয়ে হলো ৪৮ টাকা। 
 
বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার মুরগি খামারি ফারুক হোসেন জানান, পোল্ট্রি খাদ্য, শ্রমিক মূল্য, খামারে ব্যবহৃত অন্যান্য সামগ্রী, বিদ্যুতের দাম বেড়েছে। এর সঙ্গে সাম্প্রতি গিয়ে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির কারণে পরিবহন ভাড়া বেড়েছে। ডিম ও মুরগির দাম না বাড়ালে লোকসান গুণতে হবে খামারিদের। তিনি জানান, খামারিদের মাঝেও এখন টিকে থাকার প্রতিযোগিতা রয়েছে। খামার শিল্পের দাম বৃদ্ধির কারণে ছোট খামার বন্ধ হয়ে গেছে। মাঝারি ও বড় খামার গুলো ধুকে ধুকে চলছে।

বগুড়া শহরের ফতেহ আলী, রেল লাইনের পাশে ভ্রাম্যমাণ মুরগির বাজার ও উপশহর বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি হালি লাল ডিম ৪৬ থেকে ৫০ টাকা, হাসের ডিম প্রতি হালি ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এদিকে মুরগির দামও বেড়েছে, সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ৪০ টাকা বেড়ে ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৯০ টাকা। গত সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগির কেজি ছিল ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা। ব্রয়লার মুরগির পাশাপাশি দাম বেড়েছে পাকিস্তানি কক বা সোনালি মুরগির। সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৭০ থেকে ২৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ২৫০ থেকে ২৫৫ টাকা। এছাড়া লেয়ার মুরগি গত সপ্তাহে ২৬০ টাকা কেজি থাকলেও তা বেড়ে এখন ২৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

বগুড়া সদর উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা আব্দুস সামাদ জানান, জেলায় ছোটবড় মিলে সাড়ে ৩ হাজার পোল্ট্রি খামারি রয়েছে। এরমধ্যে বর্তমানে কিছু কিছু ছোট খামার বন্ধ রয়েছে। ডিম ও মুরগির দাম বেড়ে যাওয়াটা বাজার ব্যবস্থার ওপর নির্ভর করছে। 


বিডি প্রতিদিন/নাজমুল

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর