১৯ আগস্ট, ২০২২ ০০:২০

বিয়ে বাড়ির গেট নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা, গ্রেফতার আতঙ্কে দুই গ্রাম পুরুষ শূন্য

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

বিয়ে বাড়ির গেট নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা, গ্রেফতার আতঙ্কে দুই গ্রাম পুরুষ শূন্য
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে বিয়ে বাড়ির গেটের ডিজাইনকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষের ঘটনায় ১২৭ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছে পুলিশ। মামলায় অজ্ঞাত পরিচয় আরও ৮০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। বুধবার বিকেলে নবীনগর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. ইমরান বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
 
তবে মামলা দায়েরের পর পরই গ্রেফতার আতঙ্কে দুই গ্রাম পুরুষ শূন্য হয়ে পড়েছে। গ্রেফতার এড়াতে উপজেলার দৌলতপুর এবং সীতারামপুর বাজারের দোকানপাট বন্ধ রয়েছে।
 
জানা যায, সোমবার নবীনগর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের সীতারামপুর গ্রামের রিয়াজুদ্দিন গোষ্ঠীর রাজুর বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছিল। সেখানে ডেকোরেশনের কাজ করেন দৌলতপুর গ্রামের হাসান আলী বাড়ির এক ছেলে। ডেকোরেশনের গেটের ডিজাইনের কাজ পছন্দ হয়নি বিয়ে বাড়ির লোকজনের। এ নিয়ে দৌলতপুরের ডেকোরেশনের ছেলেটির সাথে তাদের বাক-বিতণ্ডা হয় ও ধস্তাধস্তি হয়।
 
বিষয়টি মীমাংসা করতে মঙ্গলবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের এক জায়গায় উভয়পক্ষকে নিয়ে সালিশে বসা হয়। এরই মাঝে সন্ধ্যার পর খবর আসে ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দৌলতপুর ও সীতারামপুর গ্রামের দুই যুবক তর্ক-বিতর্কের একপর্যায়ে মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। আহতের পাশাপাশি অনেক দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়েছে। পুলিশ প্রায় দুই ঘণ্টা চেষ্টা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
 
এ ঘটনায় বুধবার বিকেলে নবীনগর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. ইমরান বাদী হয়ে ১২৭ জনের নাম উল্লেখপূর্বক উভয়পক্ষের ৯ শতাধিক লোককে আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পরই দুই গ্রামের লোকদের মধ্যে পুলিশের আতঙ্ক বিরাজ করছে। গ্রেফতার আতঙ্কে দুই গ্রামের পুরুষরা এলাকা ছেড়েছেন।
 
দৌলতপুর গ্রামের হাবিব মিয়া বলেন, দুই পরিবারের ঝগড়ার কারণে আমরা পুরো গ্রামের লোকজন কষ্ট করছি। রাতে বাড়িতে ঘুমাতে পারি না।
 
সীতারামপুর গ্রামের বাসিন্দা জোহরা খাতুন বলেন, ঝগড়ার পর থেকে আমরা খুবই কষ্টে আছি। বাড়িতে বাচ্চারা আছে, তারাও খুব ভয় পায়। আমরা চাই দুই গ্রামের মানুষ মিলেমিশে বসবাস করুক। ঝগড়ার পর থেকে পুলিশ রাতে বাড়িতে এসে ডাকাডাকি করে। পুলিশের ভয়ে পুরুষ লোকেরা বাড়িতে থাকতে পারছে না।
 
এ ব্যাপারে কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুফতি আমজাদ হোসেইন আশরাফী বলেন, এলাকায় শান্তি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। সেজন্য এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সাথে কথা বলেছি। স্থানীয় সংসদ সদস্য এবাদুল করিম বুলবুলের সাথেও পরামর্শ করেছি। তিনি বিষয়টি সমাধান করতে অ্যাডভোকেট সুজিতকে দায়িত্ব দিয়েছেন। দ্রুত বিষয়টির নিষ্পত্তির চেষ্টা চলছে।
 
এ ব্যাপারে নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুর রশিদ সাংবাদিকদের বলেন, বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। সংঘর্ষের ঘটনায় নবীনগর থানার এসআই মো. ইমরান বাদী হয়ে কনের বাবা জিন্নাত আলীকে প্রধান আসামি করে ১২৭ জনের নাম উল্লেখপূর্বক অজ্ঞাতনামা আরও ৮০০ জনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। আমরা মামলায় সাতজনকে গ্রেফতার করেছি।
 
বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর