২৯ নভেম্বর, ২০২২ ২০:৪০

জামালপুরের সঙ্গে যুক্ত হলো সারিয়াকান্দির ৫ মৌজা

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

জামালপুরের সঙ্গে যুক্ত হলো সারিয়াকান্দির ৫ মৌজা

বগুড়া সারিয়াকান্দি উপজেলার দুই ইউনিয়নের পাঁচটি মৌজা জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জ উপজেলার সঙ্গে যুক্ত হলো। গত ২৭ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির (নিকার) সিদ্ধান্ত মতে এই সংযুক্ত করা হয়। বগুড়া থেকে বিয়োজন ও মাদারগঞ্জ উপজেলার সঙ্গে সংযুক্ত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে অনেকেই বিক্ষুব্দ হয়ে ওঠেন। বগুড়ার সীমানার নাগরিকরা বগুড়া জেলার সঙ্গেই থাকতে দাবি জানিয়েছেন।

সারিয়াকান্দি উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিসের তথ্য অনুযায়ী, উপজেলার কাজলা ইউনিয়নের জামথল মৌজার সম্পূর্ণ ১ হাজার ২০০ একর জমি ও ১ হাজার ৫০০টি পরিবারের ৬ হাজার ৫০০ জনসংখ্যা, টেংরাকুড়া মৌজার আংশিক ৩০০ একর জমি ও ৩৫০টি পরিবারের ২ হাজার জনসংখ্যা, বেড়াপাঁচবাড়িয়া মৌজার আংশিক ১৭৫ একর জমি ও ২০০টি পরিবারের ৫০০ জনসংখ্যা, পাকুড়িয়া মৌজার আংশিক ১৫০ একর জমি ও ১৫০টি পরিবারের ৩০০ জনসংখ্যা এবং কর্ণিবাড়ী ইউনিয়নের ছোনপচা মৌজার ২৫০ একর জমি ও ২৫০টি পরিবারের ৭৫০ জনসংখ্যা বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দি উপজেলা থেকে জামালপুরের মাদারগঞ্জে যুক্ত হয়েছে। হাইকোর্টের রিট পিটিশন ১৬৯৬/২০১৪ অনুযায়ী মামলার বিরোধপূর্ণ মৌজাগুলো ছিল জামথল মাদারগঞ্জ, পাকেরদহ, টেংড়াকুড়া, পাকুড়িয়া, বেড়া পাঁচ বাড়িয়া, ছোনপচা, মানিকদাইড়, নান্দিনার চর, ধারাবর্ষা এবং বাড়ইপাড়া।

সারিয়াকান্দি উপজেলার আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক কাজলা জামথল গ্রামের বাসিন্দা রাশেদুল ইসলাম রিপন জানান, আমাদের এলাকার বিশাল জনসংখ্যা জামালপুরের মধ্যে চলে যাচ্ছে। এটা জাতীয় নির্বাচনে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করবে। এতে এলাকার প্রতিটি মানুষই ক্ষুব্ধ। জামালপুরে বিয়োজন হওয়া অংশটি পুনরায় সারিয়াকান্দি ফিরিয়ে দিতে প্রধানমন্ত্রীর পুনর্বিবেচনা করার জন্য আমরা আকুল আবেদন জানাচ্ছি।

কাজলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি তাজুল ইসলাম তারা বলেন, বগুড়ার ঠিকানায় আমরা বড় হয়েছি। বগুড়ার ঠিকানাতেই আমরা মরতে চাই।

উপজেলার কর্ণিবাড়ী ইউপির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন দিপন বলেন, আমাদের বাপ দাদা চৌদ্দ পুরুষের ঠিকানা, জমিজমার কাগজপত্র সব বগুড়া সারিয়াকান্দির নামে। হঠাৎ করে এই ইউনিয়নের কিছু মৌজা জামালপুর মাদারগঞ্জের মধ্যে কেটে যাওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া বিরাজ করছে। এলাকাবাসী তাদের বাপ-দাদাদের বসতভিটা বগুড়া সারিয়াকান্দির মাঝেই রাখতে সরকারের কাছে আকুল আবেদন জানিয়েছেন।

কাজলা ইউপির চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম জানান, কাজলা ইউনিয়নের উর্বর মৌজাগুলো জামালপুরের মাদারগঞ্জের মধ্যে কেটে নেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলার সি এস ম্যাপ সংগ্রহের জন্য আমরা গত ১ বছর আগে জরিপ অধিদপ্তরে আবেদন করেছিলাম। কিন্তু রহস্যজনক কারণে ওই ম্যাপ আমাদের দেয়া হয়নি। ম্যাপটি হাতে পেলে আমরা আইনি লড়াই চালিয়ে যেতে পারতাম। এটা আমার ইউনিয়নের লোকজন মেনে নিতে পারছে না।

সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, জামালপুরের সীমান্তবর্তী বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দি উপজেলার চরাঞ্চলের মানুষের সুবিধার্থে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে এ ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

বগুড়া-১ আসনের (সারিয়াকান্দি সোনাতলা) সংসদ সদস্য সাহাদারা মান্নান বলেন, বগুড়া সারিয়াকান্দির কিছু অংশ জামালপুরে বিয়োজন হওয়ায় এলাকার জনগণ মর্মাহত, এ বিষয়ে আমি রাষ্ট্রপতির সাথে দেখা করে কথা বলার চেষ্টা করব। বিরোধপূর্ণ এলাকা সারিয়াকান্দির ভেতরে রাখতে চেষ্টা করব।

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর