চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রতিদিন মাইকের মাধ্যমে উচ্চ স্বরে বিভিন্ন ধরনের প্রচারণা চালানোর ফলে শব্দ দূষণে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন মানুষজন। সচেতন মহল মনে করছেন, শব্দ দূষণ রোধে প্রশাসনের পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন।
জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকাসহ প্রায় প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অসংখ্য মাইকের মাধ্যমে উচ্চ স্বরে বিভিন্ন ধরনের প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এর মধ্যে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে বিভিন্ন পুরাতন লোহা-লক্কড়, হাড়ি-পাতিল, বই-খাতা ক্রয় করার জন্য সকাল ৭টা থেকে পৌর এলাকার বিভিন্ন অলিগলিতে মাইকের মাধ্যমে প্রচারণা চালানো হয়।
এসময় অনেক নাগরিক তাদের এমন কার্যক্রমে বিরত থাকার জন্য বললেও এতে তারা কোন কর্ণপাত করেন না। আবার অনেককেই রাস্তায় সাইকেল ও ভ্যানে করে বিভিন্ন সামগ্রী নিয়ে মাইকে প্রচারণা চালাতে দেখা যায়। এমনকি মাছ-মুরগি বিক্রয় করার জন্য সময় সময় রাতেও প্রচারণা করা হয়ে থাকে। কমদামে এলইডি বাল্ব বেচার প্রচারে মাইকিং চলছে নিয়মিত। এছাড়াও মোটরসাইকেলে হাইড্রোলিক হর্ন ব্যবহার করায় শব্দ দূষণে পৌর নাগরিক অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।
উল্লেখ্য, ২০০৬ সালের শব্দ দূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালায় উল্লেখ আছে, সকাল ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সর্বোচ্চ শব্দসীমা ৫৫ ডেসিবেল এবং রাত ৯টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত ৪৫ ডেসিবেল। একইভাবে নীরব এলাকায় দিনে ৫০ ও রাতে ৪০ ডেসিবেল, আবাসিক এলাকায় দিনে ৫৫ ও রাতে ৪৫ ডেসিবেল, মিশ্র এলাকায় দিনে ৬০ ও রাতে ৫০ ডেসিবেল, বাণিজ্যিক এলাকায় দিনে ৭০ ও রাতে ৬০ ডেসিবেল এবং শিল্প এলাকায় দিনে ৭৫ ও রাতে ৭০ ডেসিবেল সর্বোচ্চ শব্দসীমা। এর ওপরে শব্দ সৃষ্টি করাকে দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।
বিধিমালায় আরও উল্লেখ আছে, হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সরকার নির্ধারিত প্রতিষ্ঠান থেকে ১০০ মিটার পর্যন্ত নীরব এলাকা হিসেবে চিহ্নিত হবে। ওইসব এলাকায় গাড়ির হর্ন বাজানো বা মাইকিং করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এ আইন অমান্য করলে দণ্ডের বিধান থাকলেও এ সকল নিয়মনীতি ও আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রতিদিন পৌর এলাকার বিভিন্নস্থানে মাইকের প্রচার ও বিভিন্ন গাড়ির হাইড্রোলিক হর্ন অহরহ বেজে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে সিভিল সার্জন ডা. এস এম মাহমুদুর রশিদ জানান, অতিরিক্ত শব্দ দূষণ শিশুসহ সব বয়সের মানুষের জন্য ক্ষতিকর। অতিরিক্ত শব্দে মস্তিষ্কে বিরক্তির কারণ ঘটে। এর পাশাপাশি শ্রবণশক্তিও লোপ পায় এবং মস্তিষ্কে চাপ সৃষ্টিসহ কর্মক্ষমতা কমে যায়।
অপরদিকে জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খাঁন জানান, শব্দ দূষণ বিষয়ে কেউ অভিযোগ দিলে শব্দ দূষণকারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই