বাগেরহাটের মোংলায় বিস্তীর্ণ এলাকায় খালের বাধ কেটে চিংড়ি খামারে লবণ পানি ঢুকানোয় কৃষকের শতশত বিঘা জমির বোরো ধান পুড়ে ও পচে নষ্ট হচ্ছে। কৃষকদের ঘরে বোরো ধান উঠতে স্থানীয় প্রশাসন ১৫ বৈশাখ পর্যন্ত লবণ পানি তুলতে নিষেধ করলেও তাতে কর্ণপাত করছে না প্রভাবশালী চিংড়ি ঘের মালিকরা। ইতিমধ্যেই উপজেলার চিলা ইউনিয়নের হলদিবুনিয়া ও বালুরমোড় এলাকার কয়েক শত বিঘা জমির বোরো ধানের ক্ষেত লবণ পানিতে পুড়ে ও পচে নষ্ট হয়ে গেছে।
মোংলার চিলা ইউনিয়নের হলদিবুনিয়া ও বালুরমোড় এলাকার সোলায়মান হোসেন, সাইফুল ইসলাম, সুমন্ত গাইনসহ একধিক বোরো ধান চাষী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এক ইঞ্চি জমিও ফাঁকা রাখা যাবে না, ওই কথার গুরুত্বে আমরা বোরো ধানের চাষাবাদ শুরু করি। বোরো আবাদের জমিতে যাতে চিংড়ি ঘের মালিকরা লবণ পানি ঢুকাতে না পারে সে জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করি। তিনি বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে লবণ পানি না ঢুকাতে এলাকার জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে বিভিন্ন মাইংকি করিয়ে দেন। উপজেলা প্রশাসন ১৫ বৈশাখ পর্যন্ত নদী, খাল থেকে লবণ পানি ঢুকানো যাবেনা বলে নিষেধাজ্ঞা দেন। এই অবস্থায় এবার দ্বিগুন জমিতে বোরো ধানের আবাদ করি। কিন্তু সপ্তাহখানেক ধরে প্রভাবশালী চিংড়ি ঘের মালিকেরা লবণ পানি ঢুকানোয় আমাদের শতশত বিঘা জমির হাজার হাজার মণ ধান নষ্ট হওয়ায় আমরা বিরাট ক্ষতির মুখে পড়েছি। একই ভারে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের বোরো ধানের জমিতে চিংড়ি ঘের মালিকরা লবণ পানি ঢুকানোয় ধান পুড়ে ও পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
মোংলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন জানান, মোংলায় গত বছর যেখানে ১০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছিল, চলতি বোরো মৌসুমে এসেখানে ২০০ হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ হয়েছে। কৃষকদের বোরো ধান রক্ষায় ১৫ বৈশাখ পর্যন্ত নদী, খাল থেকে লবণ পানি ঢুকাতে উপজেলা প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা দেয়। চিংড়ি চাষিরা ওই নিষেধাজ্ঞা না মানায় কৃষকের শতশত বিঘা জমির বোরো ধান লবণ পানিতে পুড়ে ও পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।মোংলার ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার ভূমি মো. হাবিবুর রহমান বলেন, কৃষকের জমিতে লবণ পানি ঢুকানো ও বোরো ধানের ক্ষতির বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে জড়িত চিংড়ি চাষিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/এএম