ভোলার তজুমদ্দিন ও লালমোহনে আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান রিয়াদ হোসেন হান্নান এবং ইঞ্জিনিয়ার আবু নোমান হাওলাদারের বাড়িসহ ২১ বাড়িতে হামলা ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন চাচড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রিয়াদ হোসেন হাওলাদা। এই হামলার জন্য লালমোহন ও তজুমদ্দিন উপজেলার আওয়ামী লীগের একাংশকে দায়ী করা হয়। অভিযোগ করা হয়, বর্তমান সাংসদের অনুসারীদের নেতৃত্বে এই হামলা ও ভাঙচুর করা হয়। আজ মঙ্গলবার ভোলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করা হয়। পাশাপাশি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেন রিয়াদ হোসেন হান্নান।
বেলা ১১টায় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে চাচড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রিয়াদ হোসেন ওরফে হান্নান চেয়ারম্যান তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, ২৫ জুন বেলা ১১টার দিকে পুলিশ তার বাসায় এসে তাকে খোঁজ করে। এসময় পুলিশের সাথে তজুমদ্দিন ও লালমোহন এলাকার চিহ্নিত বেশ কিছু সন্ত্রাসী আসে। তারা বাড়িঘরে হামল চালায় ও ভাঙচুর করে। সন্ত্রাসীরা ৭টি বসতঘর ও ৭টি দোকান ভাঙচুর ও লুটপাট করে। তখন এলাকাবাসী বহিরাগত ওই সন্ত্রাসীদেরকে ধাওয়া করে। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে পুলিশ ও সন্ত্রাসীরা চলে যায়। পরবর্তীতে বিকালে আরও লোকবল বাড়িয়ে ১০টি মাইক্রোবাস ও ৭০-৮০টি মোটরসাইকেলে ২০০ থেকে ২৫০ জন সন্ত্রাসী এসে পুলিশের উপস্থিতিতে বাড়িঘর ও দোকানপাটে হামলা করে। সন্ত্রাসীদের হামলার সময় স্থানীয় লোকজন বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যায়। দুই দফা হামলায় ১৫ থেকে ২০ জন আহত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে হান্নান চেয়ারম্যান অভিযোগ করেন, রবিবার বিকালে তার এলাকায় তাণ্ডব চালানোর পর সন্ধ্যায় পার্শ্ববর্তী ধলিগৌর নগর ইউনিয়নে ইঞ্জিনিয়ার আবু নোমানের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ১২টি বসতঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করে।
হান্নান চেয়ারম্যান অভিযোগ করেন, এই ঘটনায় পুলিশের কাছে অভিযোগ করা হয়। তবে পুলিশ কোন মামলা নেয়নি উল্টো পুলিশ হামলাকারীদের পক্ষে মামলা নিয়ে তাদেরকে হয়রানি করছে। হান্নান চেয়ারম্যান জানান, রবিবাট থেকে গোটা এলাকা এখন পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে।
হান্নান চেয়ারম্যান বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে ভোলা-৩ আসন থেকে ইঞ্জিনিয়ার আবু নোমান হাওলাদার মনোনয়ন প্রত্যাশী। আমরা তার পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় বর্তমান সাংসদের অনুসারী আবু তাহের চেয়ারম্যান, মেহেদী মিশু চেয়ারম্যান এবং রাসেল চেয়ারম্যান এর নেতৃত্ব দিয়ে এই হামলার ঘটনা ঘটায়। তিনি এ ঘটনার দ্রুত বিচার দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে চরভুতা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি হোসেন চেয়ারম্যান, চাচড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি মোঃ ইউসুফ সিকদারসহ এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন।
অপর দিকে সোনাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেহেদী মিশু এসব অভিযোগ অশ্বীকার করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে চাচড়া ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান আবু তাহের এবং সাবেক চেয়ারম্যান হান্নান চেয়ারম্যান এর সাথে বিরোধ চলে আসছে। ওই বিরোধের জের ধরে এসব সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এর সাথে আমরা কেউ কিংবা আমাদের এমপি মহোদয় কোনভাবেই জড়িত নই।
বিডি প্রতিদিন/এএ