উচ্চ ফলনশীল ও স্বল্পজীবন কালের আগাম জাতের বিনা ধান ১৭ এর বাম্পার ফলন হয়েছে নীলফামারীতে। এই জাতের ধান আবাদ করে একই জমিতে তিনটি ফসল ফলানো শুরু করেছেন কৃষকরা। পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ বিনা ১৭ এর আবাদ সম্প্রসারণে উদ্যোগ নিয়েছে কৃষি বিভাগ। বীজতলা থেকে শুরু করে মাত্র ১১০ দিনেই এই জাতের ধান ঘরে তুলছেন নীলফামারীর কৃষকেরা। প্রচলিত রোপা আমনের এক মাস আগেই এই ধান কর্তন সম্ভব হচ্ছে।
ইউরিয়া সার ও সেচের ব্যবহার অর্ধেক সাশ্রয়ের পাশাপাশি বালাই নাশকের ব্যবহার নেই বললেই চলে এই ধান ক্ষেতে। খরচ কম এবং ভালো ফলনের সাথে একই জমিতে চারটি ফসল উৎপাদনে কৃষিতে স্বয়ংসম্পূর্ণতায় বিনা ধানের গুরুত্ব বিশেষ বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। কৃষকরাও খুশি এই জাতের ধান আবাদ করে।
জেলা কৃষি বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তা বলছেন, খাদ্যের চাহিদা মেটানো এবং সরিষা আবাদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই জাতের ধানের আবাদ বাড়াতে মাঠ পর্যায়ে প্রচার প্রচারণা এবং প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট রংপুর উপকেন্দ্রের উদ্যোগে এবং কৃষি বিভাগ নীলফামারীর সহযোগিতায় নীলফামারী জেলায় ২ হাজার ৫৪৫ হেক্টর জমিতে ২ হাজার কৃষক আগাম জাতের বিনা ধান-১৭ আবাদ করেছেন।
বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট রংপুর উপকেন্দ্রের সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ আলী বলেন, পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ বীনা ধান-১৭ বিশেষ একটি জাতের। কৃষকরা লাভবান হবেন। খরচ কম, ফলন বেশি এবং সময়ও কম লাগছে। কৃষকদের এই জাতের ধান আবাদ করতে উদ্বুদ্ধ করছি আমরা কৃষি বিভাগের সহায়তায়।
নীলফামারী সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আতিক আহমেদ জানান, এই জাতের ধান আবাদে আমরা কৃষকদের উৎসাহ দিয়েছি। আরাজি চড়াইখোলা গ্রামে পাঁচ জন কৃষক ১৫০ শতাংশ জমিতে এই জাতের ধান আবাদ করেছেন। এক বিঘা জমিতে উচ্চ ফলনশীল আগাম জাতের বিনা ধান ১৭ আবাদ করে স্বল্প সময়ে কর্তন করতে পারছেন। আগাম কর্তন করা ওই জমিতে আগাম আলু কিংবা সরিষা চাষ করবেন। এতে করে বছরে জমিতে অন্তত তিনটি ফসল ফলানো সম্ভব। রোপা আমনের অন্যান্য জাতের ধান কর্তন করতে এখনো এক মাস সময় বাকি অথচ বীনা ধান রোপনের ৮৫ দিনের মধ্যে কর্তন করা সম্ভব হচ্ছে।
কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক ড. এস এম আবু বকর সাইফুল ইসলাম বলেন, এই জাতের ধান উচ্চ ফলনশীল ও স্বল্পজীবনকালীন। পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট রংপুর উপকেন্দ্রের উদ্যোগে এবং কৃষি বিভাগ নীলফামারীর সহযোগিতায় মাঠ পর্যায়ে প্রদর্শনী প্লট করা হয়েছে। এ জাতের ধান ১১২ থেকে ১১৮ দিনের মধ্যে কর্তন করা যায়। হেক্টর প্রতি ফলন হয় ৬ দশমিক ৮ থেকে ৭ দশমিক ৫ টন পর্যন্ত।
বিডি প্রতিদিন/এএ