উত্তরের সীমান্ত জেলা পঞ্চগড়ের আকর্ষণীয় স্থানের নাম তেঁতুলিয়া। এই এলাকার সহজ জীবনাচরন আর সবুজ প্রকৃতির মোহনীয় রূপ ভ্রমণ পিপাসু পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত উপভোগ্য। তাই বছরের সবসময়ই দেশ বিদেশের হাজারো পর্যটক ছুটে আসে এই এলাকার সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে। এবারের দুর্গা পূজার লম্বা ছুটি পেয়ে হাজার হাজার পর্যটক ছুটে আসছেন তেঁতুলিয়ায়। নানা স্পট ঘুরে তারা মুগ্ধতা নিয়েই বাড়ি ফিরছেন। এদিকে পর্যটকদের আনাগোনায় ব্যবসাসহ কর্মসংস্থানেও চাঞ্চল্য ফিরে এসেছে।
সমতল ভূমিতে বিস্তীর্ণ সবুজ চা বাগান, হাঁটু পানির ছোট বড় নদী আর ভারতীয় সীমান্ত ঘেষা গ্রামগুলোর আঁকা বাঁকা মেঠো পথে বর্তমানে হাজারো পর্যটক ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ভোরের চায়ে চুমুক দিতে দিতে কাঞ্চনজংঘার অপরূপ সৌন্দর্য্যও উপভোগ করছেন তারা। সারাদিন ঘোরা ফেরা আর আনন্দ। পূজার ছুটি কাটাতে হাজার হাজার পর্যটক এখন ছুটে আসছেন উত্তরের সীমান্ত জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়। গত কয়েকদিন ধরে সেখানে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। স্থানীয়দের আতিথিয়তা, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগ করে পর্যটকরাও বিপুল আনন্দিত। তারা বলছেন এমন এলাকায় সবার একবার আসা উচিৎ।
তেঁতুলিয়ার প্রধান প্রধান ট্যুরিস্ট স্পটগুলোতে গত কয়েকদিন ধরেই হাজারো পর্যটক বিচরণ করছেন। কাঞ্চনজংঘা দেখার জন্য তেঁতুলিয়া ডাকবাংলোতে আসছেন তারা। ভোর বেলা মহানন্দা নদীর পার থেকেই সবচেয়ে সুন্দর দেখা যায় অনন্য হিমালয় পর্বতমালা। পুরান বাজারে গড়ে তোলা হয়েছে মহানন্দা পার্ক। এখান থেকে ভারতীয় চা বাগান, ব্রিজ, নদী ও ভারতের গ্রাম আকর্ষণ করে পর্যটকদের। সবজি গ্রাম নামে খ্যাত দর্জি পাড়ায় যাচ্ছেন গ্রাম দেখতে। এই এলাকার চা বাগান, ছোট ছোট ঝোপ ঝাড়ে দেখা মেলে ব্লাক তিতির নামে একটি পাখির। স্থানীয় ভাষায় এই পাখিকে বলা হয় শেখ ফরিদ। বাংলাদেশের একমাত্র এই এলাকাতেই দেখা যায় এই পাখি। বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের জিরো পয়েন্ট অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান। এখানে ভারতীয় ফুলবাড়ি স্থলবন্দর, বিজিবি-বিএসএফ এর রিট্রিট শ্রিমনী দেখতে আসছেন পর্যটকরা। এ ছাড়া রওশনপুরের কাজী টি স্টেট, ডাহুক নদীর পাড়, বাড় বাশের ঝাড় দেখছেন তারা।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মারজোয়া হুমায়রা মেঘলা সপরিবারে ঘুরতে এসে জানান, তেঁতুলিয়ার সবকিছু অপূর্ব। এখানকার সমতলের সবুজ প্রকৃতি, নদী, মানুষের সরলতা, আপ্যায়ন সবকিছু ভালো লেগেছে।
পর্যটকদের আপ্যায়নে এগিয়ে আসছেন স্থানীয়রা। সৃষ্টি হচ্ছে নানা ধরনের কর্মসংস্থান। স্থানীয় হোটেলগুলোতে স্থানীয় খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে। অনেকে বাড়িতেই খুলে বসেছেন আবাসিক এবং খাবার হোটেল। বাংলা হোটেলের স্বত্বাধিকারী আজিজুল হক জানান, এখানকার বেশ কয়েকটি নদী যেমন মহানন্দা, বেরং, ডাহুক, ভেরসা নদীতে নানা ধরেনের মিষ্টি পানির মাছ পাওয়া যায়। এসব মাছ সংগ্রহ করে পর্যটকদের জন্য রান্না করি। এছাড়া পর্যটকরা যদি আরও স্থানীয় খাবার খেতে চায় তাও সরবরাহ করি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফজলে রাব্বি জানান, পর্যকরা যাতে নির্ভিগ্নে আনন্দ উপভোগ করতে পারে এ ব্যাপারে আমরা সচেষ্ট আছি।
বিডি প্রতিদিন/এএ