বাজারে ভালো চাহিদা ও দাম ভালো থাকায় আগাম ভুট্টা চাষে ঝুঁকছেন কৃষক। তাই কেউ আগাম জাতের ধান কাটার পর আবার কেউ ভালো দামের আশায় ভুট্টা চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন। যে কোনো ফসল মৌসুমের আগে চাহিদা ও দাম দুটোই বেশি থাকে। এছাড়াও গতবছর আগাম জাতের ভূট্টার দাম বেশী পাওয়ায় এবারও আগাম জাতের ভূট্টা বপন করছেন কৃষক। সাধারণত ডিসেম্বরে ভুট্টা বীজ বপন করা হলেও এবার আগাম ভুট্টার বীজ বপনে নেমে পড়েছেন অনেক কৃষক। আগাম ভুট্টার দাম অনেক বেশি থাকে। পরে ধীরে ধীরে তা কমতে থাকে। আগাম বাজার ধরতেই কৃষকদের মধ্যে এত ব্যস্ততা বেড়েছে।
দিনাজপুরের বিভিন্ন উপজেলা ছাড়াও কাহারোল উপজেলার বলরামপুরসহ বিভিন্ন গ্রামে, ফুলবাড়ী উপজেলার শিবনগর, আলাদিপুর, এলুয়াড়ী, খয়েরবাড়ী, বেতদিঘী, দৌলতপুর, কাজিহালসহ বিভিন্ন এলাকায় আগাম ভুট্টা চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক। ভোর থেকে চাষিরা লাঙল, কোদাল, বালতি, সুতলি নিয়ে ছুটছেন জমিতে।
জমিতে দেখা যায়, কেউ কেউ দেড় হাত পরপর জমিতে দাগ দিচ্ছেন। আবার কেউ দাগ দেওয়া জমিতে ছোট লাঙল টানছেন। আর ৪-৫জন ভুট্টার বীজ বপন করছেন। এদের মধ্যে কেউ কেউ বপন করা বীজ মাটি দিয়ে ঢেকে দিচ্ছেন। এক একর জমিতে ভুট্টার বীজ বপন করতে ৮ থেকে ১০ জন প্রয়োজন হয় বললেন কৃষকরা।
বলরামপুর গ্রামের কৃষক সহিদুল জানান, তিনি এবার আগাম জাতের ৭৫ধান কাটার পর ভূট্টার বীজ বপন করছেন ৩একর জমিতে।
শিবনগর ইউপির পুরোনো বন্দর এলাকার মামুনুর রশীদ জানান, এবার চার একর জমিতে আগাম ভুট্টা বপন করেছেন। আগাম ভুট্টা চাষে রোগ বালাই কম হয়। আগাম ভুট্টার বিশেষ চাহিদা থাকায় দাম ভালো পাওয়া যায়।
নুরপুর গ্রামের কৃষক বাবু মিয়া জানান,আগাম জাতের ধান কাটার পর সেই জমিতে আগাম ভুট্টা চাষ শুরু করেছি। ভুট্টা বীজ বপনে মহিলা শ্রমিক তিন শ টাকা আর পুরুষ শ্রমিক চারশ টাকা দিতে হচ্ছে। এরপরেও আগাম ভুট্টা চাষ লাভজনক হওয়ায় দিন দিন চাষ বাড়ছেই।
ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর জানায়, ভুট্টা রবি মৌসুমের ফসল। রবি মৌসুমে ভুট্টা দু’বার চাষ করা যায়। আগাম পর্যায়ে ১৫অক্টোবর থেকে নভেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত। দ্বিতীয় পর্যায়ে নভেম্বরের শেষ দিক থেকে ডিসেম্বরের শেষ পর্যন্ত। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার আগাম ভুট্টা বেশি চাষ হচ্ছে। কাহারোল উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন জানায়, কম খরচে অধিক লাভ হওয়ায় ভুট্টার চাষ ব্যাপক হারে বাড়ছে। আশা করা যায় এবারেও লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। তবে কৃষকদের সকল প্রকার সহযোগীতা ও পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষি বিভাগ।
বিডি প্রতিদিন/এএম