মাংস বিক্রির জন্য সরকারি ভাবে নির্দিষ্ট জায়গা থাকার পরও শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে বাজারের ব্যস্ততম সড়কের পাশে প্রতিদিন পশু জবাই করছেন মাংস ব্যবসায়ীরা। এতে দিনের পর দিন জবাইকৃত পশুর উচ্ছিষ্ট ময়লা-আবর্জনা পড়ে থেকে পরিবেশ দূষিত হলেও নজর পড়েনি স্থানীয় প্রশাসনের।
অথচ সরকারি নিয়ম অনুযায়ী পশু জবাইয়ের আগে একজন পশু চিকিৎসক পশুটির ডাক্তারি পরীক্ষা করাবেন। পশুটি সম্পূর্ণ রোগমুক্ত ও খাওয়ার উপযোগী বিবেচিত হলে সরকার নির্ধারিত কসাইখানায় জবাইয়ের পর মাংসের উপর সীল মেরে তা বাজারে বিক্রির অনুমতি দিবেন। এবং পশু জবাই ও মাংস কাটার যাবতীয় সরঞ্জাম ব্যবহারের আগে জীবাণুমুক্ত করা, খোলা মাংস বিক্রি না করা, মাংসের দোকানে প্রয়োজনীয় পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার বিধান রয়েছে।
মাংস বিক্রির জন্য গরু জবাইয়ের সরকারি যতো নিয়মকানুন থাকুক না কেন, এসবের কোন কিছুর তোয়াক্কা নেই নালিতাবাড়ীতে। প্রতিদিন শেষ রাতে কসাইরা গরু জবাই করে মাংস বিক্রি করেন। সূর্য ওঠার আগেই ক্রেতারা আসেন মাংস কিনতে। আর আজ পর্যন্ত ওই মাংসের উপর কোন প্রকার সীল দেখতে পাওয়া যায়নি।
নালিতাবাড়ীতে দুরন্ত ভোগাই নদী পৌরশহরকে দু’ভাগে ভাগ করা হয়েছে। ৭ ,৮ ও ৯ এই তিনটি ওয়ার্ড নিয়ে নদীর পূর্ব পাশে এবং ১-৬ পর্যন্ত নদীর পশ্চিম পাশে অবস্থান। ভোগাই নদীর উপর একটি ব্রিজ রয়েছে যা দুপাশের মানুষের চলাচলের জন্য। ব্রিজ থেকে নালিতাবাড়ী বাজারে নামার সময় সড়কের পাশে সড়ক ও জনপথের যায়গা দখল করে টিনের চালা দিয়ে সেখানে প্রতিদিন গরু জবাই ও মাংস বিক্রি করা হচ্ছে।
প্রতিদিন সেই সড়ক দিয়ে হাজার হাজার জনগণ দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়েও চলাচল করছে। অথচ কাঁচা বাজার ও মাংস বিক্রির জন্য (নালিতাবাড়ী বাজারে) ৭ নং ওয়ার্ডে সরকারি ভাবে নির্দিষ্ট দুটি সেড নির্মাণ করা হয়েছে। সেই সেডে দুএকটা কাঁচা বাজারের দোকান ছাড়া সম্পূর্ণ সেড ফাঁকা রয়েছে। বিক্রেতাদের প্রশ্ন করা হলে তারা বলেন, তারা গরু কিনে এনে পশু হাসপাতালে দেখিয়ে নিয়ে আসেন।
ব্যবসায়ীরা বলেন, এ যায়গা ছাড়া অন্য যায়গায় বেশি মাংস বিক্রি হয় না। তাই আমরা এখানেই মাংস বিক্রি করছি। গরু জবাইয়ের বর্জ্য আমরা পাশের পুকুরে ফেলে দেই। সেখান থেকে হয়ত দুর্গন্ধ আসে।
৭ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোরাদ হোসেন টেটন বলেন, রাস্তার পাশে তাদের মাংস বিক্রি ও গরু জবাই করা নিষেধ রয়েছে। তবে খুব শিগগিরই তাদের সরকারি সেডে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
নালিতাবাড়ী পৌরনির্বাহি কর্মকর্তা মো.কামরুল হক মো. জাহিদুল আলম বলেন, আমাদের পৌরসভায় কসাই খানা পরিদর্শক ও সেনেটারী ইন্সপেক্টর পদ দুটি শূন্য থাকায় গরুর মান নিয়ন্ত্রণের জন্য জবাই ও মাংসে সিল মারতে পরছিনা। খুব শিগগিরই প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ও হাসপাতালের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মো. ফয়জুর রহমান বলেন, বেশ কয়েকবার তাদের বিরোদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করার পর তারা গরু জবাইয়ের আগে ছাড়পত্র নিয়ে যান। কিন্ত এরপর আর আসেন না।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল