৩ মার্চ, ২০২৪ ১৬:৪১

সীমান্তের ওপারে থেমে থেমে গোলাগুলির শব্দ, কোস্টগার্ড-বিজিবির টহল জোরদার

আব্দুস সালাম, টেকনাফ

সীমান্তের ওপারে থেমে থেমে গোলাগুলির শব্দ, কোস্টগার্ড-বিজিবির টহল জোরদার

কক্সবাজারের টেকনাফের হোয়াইক্যং ও হ্নীলা ইউনিয়ন সীমান্তে থেমে থেমে সারারাত গোলাগুলির শব্দ ভেসে আসছে এপারে। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি ও জান্তা বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে মর্টারশেল ও গোলাগুলির শব্দে এপারের মানুষদের মধ্যে অজানা আতঙ্ক ভর করেছে। বৃদ্ধি করা হয়েছে বিজিবি ও কোস্টগার্ডের টহল।

শনিবার রাত থেকে রবিবার ভোর পর্যন্ত টেকনাফ সীমান্তের কয়েকটি পয়েন্টে ভারি মর্টারশেল ও গোলাগুলির শব্দ শুনতে পেয়েছেন সীমান্তে বসবাসকারী বাসিন্দারা।

নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় মিয়ানমার সরকারি বাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মির সংঘর্ষ চলছে। এতে টেকনাফের হোয়াইক্যং উত্তরপাড়া, লম্বাবিল, উনচিপ্রাং, কাঞ্জরপাড়া, হ্নীলা মৌলভীবাজার, ওয়াব্রাং, ফুলের ডেইল, চৌধুরীপাড়া, জালিয়াপাড়া এলাকায় সীমান্তের ওপারে থেমে থেমে গুলি ও মর্টারশেলের শব্দ পাওয়া গেছে। হোয়াইক্যং ও হ্নীলা সীমান্তের পূর্ব দিকে মিয়ানমারের কুমিরহালি, নাইচাদং, কোয়াংচিবং, শিলখালী, নাকপুরা গ্রামে গৃহযুদ্ধ চলছে। টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং থেকে শাহপরীর দ্বীপ পর্যন্ত ৫৪ কিলোমিটার নাফ নদীজুড়েই বিজিবি ও কোস্টগার্ড সদস্যরা টহল জোরদার করেছেন।

রাতে গোলাগুলির শব্দ শুনেছে উল্লেখ করে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী বলেন, ‘রাতে সীমান্তের ওপার মিয়ানমার থেকে থেমে থেমে ভারি মর্টারশেলের শব্দ শুনতে পাই। গোলাগুলির শব্দ এখন নিয়মিত ঘটনার মতো হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেননা, মিয়ানমারের গৃহযুদ্ধ চলমান রয়েছে।’

হ্নীলা সীমান্তের বসবাসকারী মো. আলম শাহীন বলেন, সারারাত থেমে থেমে মিয়ানমারের ভারি গোলাগুলির শব্দ আমাদের বাড়িতে ভেসে আসছে। মাঝে মধ্যে ভারি শব্দে ভয়ে ঘুম ভেঙে যায়।’

টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলম বলেন, ‘সীমান্তে গোলাগুলির শব্দ পাওয়া গেছে। লোকজনকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।’

এদিকে, শাহপরীর দ্বীপ সীমান্তে গোলাগুলির শব্দ পাওয়া না গেলেও এখনও দ্বীপের জেটিতে মানুষ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সেখানকার দোকানদার আবদুল শুক্কুর। তিনি বলেন, কয়েকদিন ধরে এই সীমান্তে কোনও গুলির শব্দ পাওয়া যাচ্ছে না। তবে নাফনদীতে কোস্টগার্ড এবং সীমান্তে বিজিবির টহল অব্যাহত রয়েছে। কিন্তু জেটি বন্ধ থাকায় আমাদের ব্যবসায় ব্যাপক লোকসান হচ্ছে।’

এখনও মিয়ানমার থেকে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে রোহিঙ্গারা। ইতিমধ্যে অনুপ্রবেশকালে প্রায় চারশত রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠিয়েছে সীমান্তে দায়িত্বে থাকা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।

এ ব্যাপারে কোস্টগার্ড চট্টগ্রাম পূর্ব জোনের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট তাহসিন রহমান বলেন, ‘ওপারের চলমান যুদ্ধের পরিস্থিতির মাঝে নাফনদী দিয়ে সীমান্তে অনুপ্রবেশের সম্ভাবনা থেকে আমরা (কোস্টগার্ড) টহল জোরদার রেখেছি। নতুন করে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। ইতিমধ্যে আমরা দুই শতাধিকের মতো অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাকে প্রতিহত করেছি।’

টেকনাফ পৌরসভার নাফনদীর কাছাকাছি বসবাসকারী ইবনে আমিন বলেন, রাতে থেমে থেমে গোলাগুলির শব্দ পাওয়া গেছে। সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের বশিপাড়া (বকশিপাড়া) থেকে গোলাগুলির বিকট শব্দ ভেসে আসছে। অনেক সময় ভারি মর্টারশেল নিক্ষেপের শব্দে মনে হয় ভূমিকম্প হচ্ছে।’

বিডি প্রতিদিন/আরাফাত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর