খুলনায় আবারও বিপজ্জনক ক্রিস্টাল মেথসহ মাদক কারবারীরা গ্রেফতার হওয়ার পর নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। গতকাল বুধবার পুলিশের অভিযানে ক্রিস্টাল মেথ ও ইয়াবাসহ পাঁচ মাদক কারবারীকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। এর আগে খুলনা ও সাতক্ষীরায় পুলিশ-বিজিবির আলাদা অভিযানে প্রায় পাঁচ কোটি টাকার ক্রিস্টাল মেথ উদ্ধার হয়।
অপরাধ বিশ্লেষকরা বলছেন, খুলনায় পুলিশে ধারাবাহিক মাদকবিরোধী তৎপরতা থাকলেও তা নির্মূল করা যায়নি। উপরন্তু ইয়াবার পাশাপাশি হেলুসিনেটিক ড্রাগ ‘ডেভিলস ব্রেথ’ ও ‘ক্রিস্টাল মেথ’ নামের মাদক ছড়িয়ে পড়ছে। মাদকের নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে নগরীর বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় কিশোর গ্যাং গড়ে উঠছে। তারা প্রকাশ্যেই চাঁদাবাজি, ইভটিজিং, ধর্ষণ ও হত্যার মতো ঘটনায় জড়িয়ে পড়ছে। গত দুই মাসে পুলিশের অভিযানে মাদকসহ গ্রেফতার হওয়া অধিকাংশই উঠতি বয়সী তরুণ।
পুলিশ জানায়, উত্তেজনাকর মাদক ক্রিস্টাল মেথ স্বচ্ছ পাথরের মতো নীলাভ সাদা। ইয়াবার চেয়েও তা অনেক বেশি ক্ষতিকর। খুলনায় গত ২৪ ঘণ্টার অভিযানে ইয়াবা ও ক্রিস্টাল মেথসহ শান্ত মোল্লা (১৯), সাইদুল ইসলাম (২৩), মাজেদুল ইসলাম (২৮)সহ পাঁচ জন গ্রেফতার হয়। তরুণ যুবকরাই ক্রিস্টাল মেথে বেশি আসক্ত হয়ে পড়ছে।
অপরদিকে হেলুসিনেটিক ডেভিলস ব্রেথ রয়েছে খুলনার সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের হাতে। পথচারীদের টার্গেট করে তাদের মূল্যবান মালামালসহ টাকা পয়সা ছিনিয়ে নিচ্ছে চক্রটি।
বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার খুলনা সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলাম জানান, মামলার দীর্ঘসূত্রতায় অপরাধ করার পরও অনেকের শাস্তি হয় না। পুলিশ শুধুমাত্র মাদক কারবারীদের গ্রেফতারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। কিন্তু তাদের শাস্তি নিশ্চিত হচ্ছে না, কিছুদিনের মধ্যে তারা ছাড়া পেয়ে একই পেশায় ফিরে যায়। কিভাবে অপরাধের মূল উৎপাটন করা যায় ভাবতে হবে। এক্ষেত্রে এলাকাভিত্তিক মাদক বিক্রেতাদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা যায়। অপরাধের পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেজন্য শাস্তি নিশ্চিতসহ সামাজিক-পারিবারিক বন্ধন দৃঢ় করা প্রয়োজন।
এদিকে মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ মোজাম্মেল হক বলেছেন, মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশ তৎপর রয়েছে। তবে পুরোপুরি নির্মূল পুলিশের একার পক্ষে সম্ভব না। এ জন্য সকলের ঐক্যবদ্ধ সহায়তা প্রয়োজন। জেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাঈদুর রহমান জানান, মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশের জিরোটলারেন্স নীতি রয়েছে। অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড কমাতে বিট পুলিশিং কার্যক্রম জোরদার করা হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল