নাটোরের গুরুদাসপুরের লিবিয়া প্রবাসী চার যুবককে জিম্মিদশা থেকে মুক্ত করেছে ঐ দেশের আইনশৃঙ্গলা বাহিনীর সদস্যরা। এর আগে অমানুষিক নির্যাতনের ভিডিও পাঠিয়ে তাদের পরিবারের কাছ থেকে ৪০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছিল। লিবিয়ায় শ্রমিক হিসাবে বিভিন্ন কাজে কর্মরত ছিলো তারা। গত ৭ দিন ধরে মুক্তিপণের দাবিতে জিম্মি যুবকদের পরিবারের কাছে শারীরিক নির্যাতনের ভিডিও পাঠাচ্ছিল অপহরণকারীরা। সবাই মুক্ত হওয়ায় এখন অপহৃতদের পরিবার ও গ্রামে চলছে আনন্দের বন্যা।
রবিবার বেলা সাড়ে ১১টায় লিবিয়া প্রবাসী সোহান মুক্ত হয়ে পরিবারের কাছে সেই ভিডিও বার্তা পৌঁছে দেন। সোহানসহ নাটোরের গুরুদাসপুরের বিয়াঘাট চরপাড়া গ্রামের নাজিম, সাগর ও বিদ্যুৎকেও নির্যাতন করে সেই ভিডিও তাদের পরিবারের সদস্যদের পাঠিয়ে জন প্রতি ১০ লাখ টাকা করে মোট ৪০ লাখ টাকা দাবি করেছিল অপহরণকারীরা। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় লিবিয়ার আইনশৃঙ্গলা বাহিনীর সদস্যরা চারজনকে জিম্মিদশা থেকে মুক্ত করে তাদের হেফাজতে নেন। সেই সাথে আটক করেন দুই বাংলাদেশি ও ২ লিবিয়ানসহ চার অপহরণকারীকে।
প্রবাসী বিদ্যুৎ এর মা বিউটি বেগম জানান, ‘তার স্বামী অনেক পূর্বে থেকেই লিবিয়ায় শ্রমিক হিসাবে কাজ করতো। পরবর্তীতে তার ছেলেসহ প্রতিবেশী আরো তিন যুবক এক সঙ্গে লিবিয়ায় যান শ্রমিক হিসেবে। তার ছেলেও অপহরণের শিকার হয়েছিলেন। অপহরণ হওয়ার পর থেকেই পরিবার ও স্বজনদের আহাজারী থামছিলো না। রবিবার সকাল সাড়ে ১১টার সময় তার স্বামী তাকে কল করে জানায় তার ছেলেসহ চারজনকেই লিবিয়ার স্থানীয় প্রশাসন উদ্ধার করেছে। রাতের মধ্যেই তার স্বামীর কাছে হয়তো ফিরে যাবে তার সন্তানসহ প্রতিবেশীদের সন্তানরাও।’
সোহানের মা রুলি বেগম জানান, তার সন্তান মুক্ত হয়ে তার সাথে কথা বলেছে। এতে তিনি আনন্দিত। গণমাধ্যমকর্মী ও পুলিশ প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।
গুরুদাসপুর থানার ওসি উজ্জল হোসেন জানান, ‘ঘটনার পর থেকেই তিনি এ বিষয়ে তার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছিলেন। নাটোর পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলামের নির্দেশে শুরু থেকে আজ পর্যন্ত পরিবারগুলোর সাথে থানা পুলিশ সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখেছে।’
বিডি প্রতিদিন/হিমেল