৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১৯:৫৭

মামলা থেকে বাদ দিতে আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে বিএনপি নেতার গোপন আঁতাতের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

মামলা থেকে বাদ দিতে আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে বিএনপি নেতার গোপন আঁতাতের অভিযোগ

মামলা থেকে নাম বাদ দেওয়া ও নতুন নাম অন্তর্ভুক্ত করতে সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানা বিএনপির নেতারা স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে গোপন আঁতাত করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। 

সলঙ্গা থানা বিএনপির সভাপতি ও জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মতিয়ার রহমান সরকার মতির স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে গোপন বৈঠকের খবর ফাঁস হওয়ার পর তোলপাড় শুরু হয়েছে স্থানীয় বিএনপি নেতা কর্মীদের মধ্যে। 

জানা যায়, আওয়ামী লীগ সরকার পতন আন্দোলন চলাকালে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলাসহ বাসা-বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনার পর বিশেষ সুবিধা নিয়ে মামলা থেকে বাঁচাতে ও নতুন নাম অন্তর্ভুক্ত করতে ২৭ আগস্ট গভীর রাতে সলঙ্গা থানা বিএনপির সভাপতি ও জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মতিয়ার রহমান সরকার মতি স্থানীয় প্রভাবশালী কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে সলঙ্গা থানার রামারচর এলাকার রয়েল রূপালী হোটেলে বসে বৈঠক করেন।

ওই বৈঠকের একটি ভিডিও চিত্র স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে এ নিয়ে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

বৈঠকে আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- সলঙ্গা থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুর রশীদ বিএ, সলঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শফি কামাল শফি, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক সদস্য, থানা যুবলীগের সভাপতি ও সলঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান, আওয়ামী লীগ নেতা শামসুল আলম, আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।

এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বিএনপির একাধিক নেতা জানান, মামলা থেকে নাম বাদ দেওয়া ও নতুন নাম অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষ্যেই এ গোপন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ ধরনের নেতার কারণে দলের ভাবমূর্তি দারুণভাবে ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। এমন কর্মকাণ্ডের সঠিক শাস্তি দাবি করেন তারা।

সলঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা শফি কামাল শফি বলেন, বিএনপি নেতা মতিয়ার রহমান মতির সঙ্গে আমাদের ব্যক্তিগত সম্পর্ক। তাই মামলা সংক্রান্ত আলাপ আলোচনা হলেও কোনো আঁতাত হয়নি।

তবে অভিযুক্ত সলঙ্গা থানা বিএনপির সভাপতি ও জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মতিয়ার রহমান সরকার মতি আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়টি স্বীকার করলেও অন্যান্য অভিযোগ অস্বীকার করেন।

উল্লেখ্য, গত ৭ জানুয়ারি ২০২৪ এর নির্বাচনে উল্লাপাড়া-সলঙ্গা সংসদীয় আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর তার বাড়িতে গিয়ে নগদ আর্থিক সহযোগিতা দিয়ে বের হবার সময় স্থানীয় নেতাকর্মীর তোপের মুখে পড়েন মতিয়ার রহমান সরকার মতি। এ বিষয়ে জেলা বিএনপিকে ব্যবস্থা নেওয়ার বারবার অনুরোধ করা হলেও অদৃশ্য কারণে কোন সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। 

পরবর্তীতে উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী মুক্তি মির্জা, ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী পান্নার পক্ষে প্রকাশ্য ভোট চাওয়া শুরু করলে দলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মী ক্ষোভে ফুসে উঠে। অবস্থা বুঝে ঘটনাস্থল থেকে সলংগার থানা বিএনপির এই সভাপতি পালিয়ে যায়। সাম্প্রতিক সময়ে মামলাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সাথে আঁতাতের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সকল জাতীয় ও স্থানীয় সংবাদপত্রে ব্যাপক ভাবে প্রচার হয়। এরপরও সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপি দায়সারা কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করে মিমাংসার চেষ্টা করছে। এই অবস্থায় সলঙ্গা থানা বিএনপির সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ এবং বিক্ষুব্ধ অবস্থা বিরাজ করছে।

বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর