শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় প্রায় প্রতি রাতেই বন্য হাতির দল তাণ্ডব চালিয়ে খেয়ে সাবার করছে কৃষকের কষ্টার্জিত সোনার ফসল আমন ধান। বর্তমানে বন্য হাতির ভয়ে নিজেদের খোরাকির ধান যোগান দিতে ও সংগ্রহ করতে এলাকার কৃষকরা আধাপাকা ধান কাটতে শুরু করেছেন।
সম্প্রতি চেল্লাখালী নদীর পাহাড়ি ঢলের পানিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পর এবার গারো পাহাড়ে বন্য হাতি অব্যাহতভাবে তাণ্ডব চালিয়ে ফসল খেয়ে ও পা দিয়ে মাড়িয়ে বিনষ্ট করছে। এতে কৃষক দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
উপজেলার বাতকুচি গ্রামের সাধুর খোল নামের এক পাহাড়ি গোপে হাতিরদল নেমে এসে কৃষক সাহেদ আলী, হযরত আলী, সাজিরন বেগম, আবু সামা, আবুবকর, মজিবর রহমান, শামছুল হক, উমর আলী ও আব্দুল কুদ্দুসেরসহ প্রায় ১০ একর জমির ধানক্ষেত খেয়ে ও পা দিয়ে মাড়িয়ে বিনষ্ট করেছে। এতে কৃষকের পড়েছে মাথায় হাত। তারা হাতির অত্যাচারে ফসল বিনষ্টের স্থায়ী সমাধান দাবি করেন।
ময়মনসিংহ বনবিভাগের মধুটিলা ফরেস্ট রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, বন্য হাতির অত্যাচারের শুরুর দিকে কৃষকরা কোনো প্রকার ক্ষতিপূরণ পেতেন না। বর্তমানে বন্য হাতি দ্বারা নিহতের পরিবার সরকারিভাবে ৩ লাখ, আহত ব্যক্তি ১ লাখ ও ফসলের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা ক্ষতিপূরণ হিসেবে পাচ্ছেন সর্ব্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা। ইতোমধ্যে মধুটিলা ফরেস্ট রেঞ্জের আওতাধীনে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষককে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে। একইসাথে বন্য হাতি ও মানুষের মাঝে দ্বন্দ্ব নিরসনে সতর্ক থাকতে এলাকায় মাইকিং করাসহ নানা ধরনের প্রচার প্রচারনা চালানো হচ্ছে।
নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাসুদ রানা বলেন, বন্য হাতি দ্বারা প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা প্রস্তুত করে দ্রুত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। যেহেতু কৃষকদেরকে সরকার ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে তাই আইন হাতে তুলে নিয়ে কোনো ক্রমেই বন্য হাতিকে উত্যক্ত বা হত্যা করা যাবে না। তাছাড়া বন্য হাতি ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে দ্বন্দ্বের বিষয়ে একটি স্থায়ী সমাধানের জন্য আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে অবগত করবো।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল