পাবনায় সৎসঙ্গের প্রতিষ্ঠাতা শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্রের ১৩৮তম আবির্ভাব দিবস বর্ণাঢ্য আয়োজনের মাধ্যমে পালিত হয়েছে। প্রার্থনা সভা, গঙ্গা স্নান, ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পসহ নানা অনুষ্ঠান মঙ্গলবার হিমাইতপুর বিশ্ববিজ্ঞান কেন্দ্র প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়। জন্মলগ্ন ঘোষণা দিয়ে শুরু হয় জন্মোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা।
প্রতীকী গঙ্গা স্নানের পর শহরের পাথরতলা ঠাকুরবাড়ী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বকুল মুক্তমঞ্চে বেদমাঙ্গলিক অনুষ্ঠানে অংশ নেন ভক্তরা। জন্মোৎসব উপলক্ষে পাবনা মানসিক হাসপাতালের রোগীদের মাঝে ফল ও মিষ্টান্ন বিতরণ করা হয় এবং সাধারণের জন্য মেডিকেল ক্যাম্পে বিনামূল্যে চিকিৎসা ও ওষুধ সরবরাহ করা হয়। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের কয়েক হাজার সৎসঙ্গী অংশ নেন।
প্রার্থনা সভা ও ঋত্বিক সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সৎসঙ্গ বাংলাদেশের সভাপতি কুঞ্জবিহারী আদিত্য, সম্পাদক ধৃতব্রত আদিত্য, সহ সম্পাদক অমল চন্দ্র রায়, নিখিল মজুমদার, ডাক্তার সুব্রত রায় পিন্টু ও অন্যান্য স্থানীয় ও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত ঠাকুর ভক্তরা।
বাগেরহাট থেকে আগত ভক্ত কৃষ্ণকলি মজুমদার বলেন, “ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র বলতেন, মসজিদে যেমন আজান দেওয়া হবে, নামাজ হবে, তেমনি হিন্দুদের মন্দিরও নিরাপদে পূজা পার্বণ করতে পারবে। একজন মানুষ যদি ভালো হয় এবং তার ধর্ম ঠিকভাবে পালন করে, এটি দেশের মঙ্গলের জন্য। সংখ্যালঘু বা সংখ্যাগুরু—কোনো বৈষম্য ঠিক নয়।”
সহ সম্পাদক নিখিল মজুমদার উল্লেখ করেন, “ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র ধর্ম, বর্ণ ও প্রথা ভেদাভেদ বিরোধী ছিলেন। তিনি মানবতার জয়গান গেয়েছেন এবং খাঁটি মানুষের সন্ধান দিয়েছেন। তাঁর দীক্ষানুসারে খাঁটি মানুষ হতে পারলে মানবজীবন পূর্ণতা পাবে।”
ধৃতব্রত আদিত্য বলেন, “ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র পাবনার হিমাইতপুরে জন্মগ্রহণ করেছেন। এটি ভক্তদের কাছে পুন্যভূমি। তবে জন্মস্থান ও বিশ্ববিজ্ঞানকেন্দ্র অরক্ষিত পড়ে আছে এবং মাদকসেবীদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। আমরা এখানে ঠাকুরের স্মৃতি রক্ষায় মন্দির প্রতিষ্ঠার জন্য সরকারের সহায়তা চাই।”
১৩৮ বছর আগে এই মহাপুরুষ পাবনার হিমাইতপুরে জন্মগ্রহণ করেন। সাম্য ও অসাম্প্রদায়িকতার বাণী দিয়ে সব ধর্ম-বর্ণের মানুষের মন জয় করেছিলেন তিনি। প্রতি বছর ভক্তরা ঠাকুরের আবির্ভাব দিবস হিসেবে তার জন্মদিন উদযাপন করেন।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল